চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দুর রহমানকে। আর সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
এ ছাড়া, ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলার (ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী) দুজন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত টিমকে উল্লেখিত অঞ্চলের কেন্দ্রীয় কমিটির নিম্নোক্ত সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কমিটির প্রস্তাবনার দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়।
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাক্ষরিত চিঠিটি প্রকাশ পাওয়ার পরই ফরিদপুরের বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তার একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগ্নি। তার বাবার নাম সৈয়দ গোলাম দস্তগির। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির মেয়ে হয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা হওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজের দিক থেকে একটা ব্যাখ্যা দিয়ে রাখতে চাই। আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন আমি করে আসতেছি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘‘নো মেট্রো অন ডিইউ’’ মুভমেন্ট, রামপালবিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগমুক্ত করাসহ অন্যান্য সব আন্দোলনের আমি অতি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলারও একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’
তিনি বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিলাম না। তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনেশুনে বুঝে এবং আমি ‘‘লিটমাস’’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করেছেন।’
আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনের, এ বিষয়টি কোন দৃষ্টিতে দেখছেন জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কীভাবে আমাদের ওপর নির্বিচারে গুলি ছুড়েছে। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজনা নয়।’
‘সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই’-মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। সঠিক যাচাই-বাছাই করা হলে, এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’