আজ (শনিবার, ১৭ মে) পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে রায়মঙ্গল নদীর বয়েসিং এলাকায় জলসীমায় স্থাপিত বিজিবির ভাসমান বিওপি’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) যশোর রিজিয়নের আওতায় পরিচালিত রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানির দায়িত্বে থাকা এলাকাগুলোতে এই ভাসমান বিওপি জলসীমান্তের নিরাপত্তায় কাজ করবে।
সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনের মান্দারবারি সীমান্তসহ বিভিন্ন এলাকায় ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, তিনি নিজে মান্দারবারি সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন এবং বিষয়টি ভারতের কাছে কূটনৈতিকভাবে উত্থাপন করা হয়েছে।
ভারতীয়দের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিক তাদের এলাকায় অনুপ্রবেশ করে থাকে, তবে আইনগত প্রক্রিয়ায় আমাদের কাছে হস্তান্তর করুন। আমরাও একই নীতিতে কাজ করি।’
তিনি আরো বলেন, ‘শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পক্ষ পুশইনের চেষ্টা করেছিল। তবে বিজিবি, আনসার ও স্থানীয় জনসাধারণের প্রতিরোধে তারা ব্যর্থ হয়। এরকম প্রতিটি ঘটনায় জনসাধারণের সহযোগিতা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
কূটনৈতিক সমাধান প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে প্রতিবাদ লিপি পাঠানো হয়েছে এবং রাষ্ট্রদূত, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে আলাপ হয়েছে।
ভারতের আচরণকে উসকানিমূলক মনে করছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি একে উস্কানি বলবো না। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে, আমি তখন বিজিবি মহাপরিচালক ছিলাম।’
সাম্প্রতিক সময়ে গুজরাটে বসবাসকারী বাঙালিদের একটি বসতি উচ্ছেদ করার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনাটির পরই পুশইনের চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা।’
ইউএনএইচসিআর কার্ডধারী ও রোহিঙ্গাদের পুশইন নিয়ে প্রশ্ন করলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশে আগে থেকেই অবস্থান করা কিছু রোহিঙ্গা এবং নতুন করে পাঠানো ভারতীয় রোহিঙ্গাদের বিষয়টি নিয়েও আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা কাউকে পুশব্যাক করবো না। অবৈধভাবে কাউকে ফেরত পাঠানো আইন সম্মত নয়। আমাদের দেশে থাকা অবৈধ ভারতীয় নাগরিকদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠানো হবে।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, বিজিবি সদর দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা, যশোর রিজিয়নের কমান্ডার, খুলনা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার, নীলডুমুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, আরবিজি কোম্পানির অধিনায়কসহ অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিকরা।