২০১৩ সালে চালু হলেও অতিরিক্ত খরচসহ নানা কারণে শুরু থেকেই পানগাঁও ব্যবহারে সাড়া দেয়নি ব্যবসায়ীরা। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে পাঁনগাও রুটে একটি কনটেইনার জাহাজ ডুবি এবং পণ্য খালাসে কাস্টমস হয়রানির কারণে গেল দেড় বছরে পণ্য পরিবহন নেমে আসে সাত থেকে ৮ শতাংশে ।
চট্টগাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এই টার্মিনালে দেড় শতাধিক জাহাজ ভেড়ে ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় প্রায় ৩০ হাজার একক। অথচ ২০২৪ সালে জাহাজ ভিড়েছে মাত্র ২১টি, আর কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে মাত্র ২ হাজার ৮৭৫ একক। এতে বন্দরের আয় ১২ কোটি টাকা থেকে কমে ৩ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। ২০২৫ এর মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে জাহাজ ভিড়েছে মাত্র ৮টি, কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ হাজার ৪৪ টিইইউএস। এ অবস্থায় পানগাঁও টার্মিনালটি ১২ বছরের জন্য বেসরকারি অপারেটর দিয়ে পরিচালনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। এক্সপ্রেশন্স অব ইন্টারেস্টে যোগ্য বলে নির্বাচিত তিনটি প্রতিষ্ঠানকে শিগগিরই আরএফপি ইস্যু করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে ট্যারিফ কমানো হয়েছিলো। আরো অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়ার পরেও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা ইতোমধ্যে একটা ‘‘ইওয়াই’’ জারি করেছি ১২ বছরের জন্য। তিনটা প্রতিষ্ঠান এখানে কোয়ালিফাই করেছে। এদের মধ্যে থেকে আমরা বেস্ট অপারেটর চুজ করবো।’
তবে ব্যবসায়ীদের আস্থা ফেরাতে টার্মিনাল পরিচালনাকারী অপারেটরকে এই রুটে জাহাজ পরিচালনার সুযোগ দেয়া ও হ্যান্ডলিং চার্জসহ ট্যারিফ কমানোর দাবি ব্যবসায়ীদের।
এমএসসি শিপিংয়ের মহাব্যবস্থাপক আজমীর হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘বেসরকারি করা হলে এটা তাদের উপর নির্ভর করবে তারা কীভাবে তাদের ভলিউম ইনক্লুড করবে। কাস্টমারদের কীভাবে আকর্ষণ করবে, কীভাবে তাদের সার্ভিস দেবে, প্রতিটা অপারেটর তাদের নিজস্ব স্টাইলে আগাবে।’
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, বেসরকারি অপারেটর নিয়োগে বন্দর পরিচালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা জরুরি। অপারেটর চাহিদা অনুযায়ী উন্নত সেবা দিলে পানগাঁও বন্দর সচল করা সম্ভব।
বাংলাদেশ ফ্রেইটফরওয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘বন্দর অনেকদিন ধরেই বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছিলো কিন্তু সেভাবে ফাংশনিং করতে পারছিলো না। এখন যদি বেসরকারিকরণ করে এখান থেকে উপার্জন করতে পারে তাহলে দুটোই উইন উইন অবস্থা হবে৷’
বছরে প্রায় এক লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে ক্ষমতার ৯২ শতাংশই অব্যবহৃত থাকছে পানগাঁও নৌ টার্মিনালের।