পাহাড় পেরিয়ে দইজ্জার পার, সাম্পানের টানে, কর্ণফুলীর পাশঘেঁষা সবুজের শহর চট্টলা। এই শহর জেগে থাকে ঝর্ণার গান আর নানা উৎসব-আয়োজনে। আন্দরকিল্লা, চেরাগী পাহাড় মোর, লালদিঘি, ওয়া সিমেট্রি, সিআরবি, পতেঙ্গা, কিংবা দইজ্জার পার। বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষে কর্ণফুলী নদীর ছুটে চলার সঙ্গী এই চট্টগ্রাম। পাহাড়, ঝর্ণা বা লবণাক্ত স্রোতে ঘেরা অপূর্ব সুন্দর এই নগরে, কোথাও কোনো ক্লান্তির ছাপ নেই।
কীভাবে রান্না হয় ঐতিহ্যবাহী মেজবান; এই প্রশ্নের উত্তরে বাবুর্চি বলেন, ‘আমাদের আগের মেজবান আর এখনের মেজবানের কোনো পার্থক্য নেই। আমাদের অনেক মশলা আছে, সেগুলো তো বলা যাবে না। মেজবানের আসল উপকরণ হচ্ছে রাঁধুনি।’
ঐতিহ্যবাহী মেজবানের স্বাদ কি ধরে রাখতে পারে রেস্তোরাঁগুলো? এমন প্রশ্নের জবাবে বাবুর্চি বলেন, ‘ওরশ মেজবানে লাল মরিচ দেয়া হয়, তেহারিতে লাল মরিচ দেয়া হয় না। ওরশ মেজবানে সিদ্ধ চাল দিই, আর এটা আমরা রান্না করি আতপ চাল দিয়ে।’
সিআরবি, নেভাল, কর্ণফুলি পার, ডিসি হিল, সি-বিচসহ নানা জায়গায় বসে আড্ডা, সেখানেই জমে উঠছে আধুনিক রেস্তোরাঁগুলো। কী ধরনের খাবার বেশি পছন্দের জানতে চাওয়া হলে স্থানীয়রা জানান, যারা চট্টগ্রামে আসবেন তারা যেন ট্র্যাডিশনাল যেকোনো রান্না, শুঁটকি, ভর্তা এই খাবারগুলো ট্রাই করে। ভোজনবিলাসকে আমরা আমাদের জীবনের একটি অংশ মনে করি।
পাহাড়ের মাঝ দিয়ে তৈরি সড়ক ধরে এগোলেই চোখে পরে সমুদ্র সৈকত। এখানেও ছোট ছোট স্টলে ভিড় করেন ভোজনপিপাসু ভ্রমণ রসিকেরা। সমুদ্রের সৈকতে এসে কেমন খাবার পছন্দ তাদের জানতে চাওয়া হলে পর্যটকরা জানান, গরম পেঁয়াজু, কাঁকড়া ও ফিস ফ্রাই, এসবই খাওয়া হয় বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, এখন মাছের চাহিদা কম। পেঁয়াজু, কাঁকড়ার চাহিদা বেশি।
শহরের বুকে ছড়িয়ে ছোট বড় পাহাড় সাথে সমুদ্র, কী নেই এই শহরে। প্রকৃতির মাঝে বেড়ে ওঠা আধুনিক সভ্যতায়, ঐতিহাসিক খাবার পরিবেশন করা হয় আধুনিক কায়দায়, বিবর্তনের মাঝেও চট্টগ্রামের খাদ্য সংস্কৃতি টিকে আছে তার আপন মহিমায়।