২০২৪ সালের ২৬ আগস্ট, ভারতের উজানের পানির বাড়তি চাপ ও টানা বৃষ্টিতে ধসে যায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর স্লুইস গেটের ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর। রেগুলেটরের আশপাশে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করায় রেগুলেটরটি আগে থেকেই ঝুঁকিতে ছিলো।
রেগুলেটরটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে মুছাপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুরু হয় নদী ভাঙ্গন। এরইমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি- ফসলী জমি। গত এক বছরে আশ্রয়ের খোঁজে অন্যত্র চলে গেছে শতাধিক পরিবার।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘সরকার থেকে টেন্ডার নিছে এর বাইরে থেকে বালু আনবে। কিন্তু এই নদী তেকেই বালু নিয়ে এই নদীর কিনারে আবার দেয় তাহলে নদী থাকবে? না বালুগুলো থাকবে? না রাস্তাঘাট থাকবে।’
অন্য একজন বলেন, ‘আমাদের এলাকা এমনিতেই তলে যাচ্ছে। এভাবে বালু তুলে আরও তলে গেলে আমরা কোথায় যাবো? কোথায় থাকবো?’
জরুরি ভিত্তিতে নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। তবে ভাঙন কবলিত নদী থেকে বালু তুলে তা দিয়েই সেই জিও ব্যাগ ভরাটের অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রকল্পের ঠিকাদার গোলাম রব্বানী কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। নিয়ম অনুযায়ী অন্য জায়গা থেকে বালু এনে তা দিয়ে জিও ব্যাগ ভরাটের কথা থাকলেও রাতের আঁধারে নদী থেকেই বালু তুলছেন। স্থানীয়রা এতে বাধা দিলে তাদের দেয়া হচ্ছে হুমকি।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমাদের অনুরোধ এখান থেকে যেন বালু উত্তোলন না করা হয়। বাইরে থেকে বালু তুলে যেন এই জিও ব্যাগ ভরা হয়।’
সরেজমিনে বালু উত্তোলন, জিও ব্যাগ ফেলা ও শ্রমিকদের কাজ চোখে পড়লেও সবকিছুই অস্বীকার করে প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু হয়নি বলে জানান ঠিকাদার।
গোলাম রব্বানী কনস্ট্রাকশন লিমিটিডের ঠিকাদার গোলাম রব্বানী কামনা বলেন, ‘কাজ আরম্ভ করিনি এখনও। কাজ আরও দুই চারদিন পর আরম্ভ করবো। আমরা সেনাবাহিনীর কাজ করি। সেনাবাহিনীর কাজ এখনও আরম্ভ হয়নি।’
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানার পরপরই সেনাবাহিনীসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে জানানো হয়েছে, ডিসি স্যারের সঙ্গে আলাপ করেছি। আসলে ওখান থেকে বালু উঠিয়ে আবার ওখানেই দেয়ার কোনো অ্যাক্টিভিটি মূলত নাই। কড়া স্টেপ নিচ্ছে সবাই, যদি কেই উঠিয়ে থাকে বালু।’