ভালুকায় উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য দৃষ্টিনন্দন স্টিলের টি-স্টল

ময়মনসিংহ
ব্যবসায়ীদের জন্য দৃষ্টিনন্দন স্টিলের টি-স্টল
এখন জনপদে
1

ময়মনসিংহের ভালুকায় উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ (মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই) ক্ষতিগ্রস্ত ২৮ চা দোকানিকে দেয়া হয়েছে একটি করে দৃষ্টিনন্দন টি-স্টল। স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি টি-স্টলগুলো দেখতে যেমন নান্দনিক তেমনি বেশ মজবুতও। এর ডিজাইন এবং নজরকাড়া নামের কারণে পেয়েছে ভিন্ন মাত্রা। সারা দেশে অনুকরণীয় হতে পারে এ মডেল।

চারুদ্বীপ, মেঘদল, কুহেলিকা, তিথিডোর, অনামিকা, নিলাম্বরী, কুঞ্জন, মেঘমালা, প্রীতিলতা, উড়োচিঠি। এগুলো একেকটি টি স্টলের নাম। স্টেইনলেস স্টিলের পাত ও চারকোনা এসএস পাইপ দিয়ে নান্দনিকভাবে তৈরি করা হয়েছে প্রতিটি টি-স্টল। সামনে ধোয়া ওঠা চায়ের কাপের স্টিকারে দিয়েছে বাড়তি সৌন্দর্য।

সম্প্রতি যানজট নিরসন ও ফুটপাতে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা সদরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুইপাশে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদ করে উপজেলা প্রশাসন। এতে কর্ম হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন অনেক ক্ষুদ্র দোকানি। বিপর্যয় নেমে আসে তাদের পরিবারে।

বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এসব ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে ২৮জন চা দোকানিকে দেয়া হয়েছে একটি করে দৃষ্টিনন্দন টি-স্টল। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে হস্তান্তর করা হয় টি-স্টলগুলো। বিনামূল্যে টি-স্টল পেয়ে খুশি দোকানিরা। পাশাপাশি স্থায়ীভাবে দোকানের স্থান নির্ধারণ করে দেয়ায় আর উচ্ছেদের আতংকও তাড়া করবেনা তাদের। রোদ-বৃষ্টির ভোগান্তি থেকেও মিলবে মুক্তি।

টি-স্টল পাওয়াদের কয়েকজন জানান, এখন আর তাদের উচ্ছেদের ভয় নেই। রোদে পুড়তে হবে না, বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না। উচ্ছেদের পর হতাশায় থাকলেও এখন স্বস্তি লাগছে। তবে টি স্টলের সামনে দুটি টবে গাছ লাগানো, বেঞ্চের বদলে টুল ব্যবহার, দোকানের আশপাশের দশ বর্গফুট এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখা এবং সিগারেট বিক্রি না করার শর্ত দেয়া হয়েছে। শর্তে মেনেই দোকান পরিচালনা করবে সবাই।

এদিকে চা দোকানি ছাড়াও উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত ফল ব্যবসায়ীদের জন্য নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে একটি ফলের মার্কেট। এতে প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী পেয়েছেন দোকানের স্থায়ী ঠিকানা।

উচ্ছেদ অভিযানে যেমন জনস্বার্থ দেখা হয়েছে তেমনি উচ্ছেদ করা ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে বলে জানান ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে পুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি। একটি ফল মার্কেট করে দেয়া হয়েছে। আরও একটি হকার্স মার্কেট করা হবে।

এদিকে ফুটপাত উচ্ছেদ করে মহাসড়কের দুইপাশে দুটি রাস্তা নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এতে পথচারীদের চলাচল যেমন নির্বিঘ্ন হয়েছে তেমনি কমেছে যানজট।

নান্দনিক টি স্টলগুলো বরাদ্দ পেয়ে নতুনভাবে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ফুটপাতের ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এর মাধ্যমে হয়তো কিছুটা হলেও ঘুচবে অভাবের সংসারের টানাপড়েন। দেখবেন একটু সচ্ছলতার মুখ। হাসি ফুটবে সন্তানের মুখে। পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন টি স্টলগুলো স্থাপনের ফলে বদলে যাবে ফুটপাতের পরিবেশ।

এএইচ