পদ্মা সেতুর প্রকল্প এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন, নদীতে বিলীন ৮০০ মিটার বাঁধ

পদ্মায় ভাঙনের কবলে ঘরবাড়ি, দোকানপাঠ
এখন জনপদে
0

শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধটির ৮০০ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়েছে। ফলে, ঝুঁকির মুখে রয়েছে সেতু সংলগ্ন অবকাঠামো ও হাট-বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিস্তীর্ণ জনপদ। অব্যাহত ভাঙন ঝুঁকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে অন্তত ৬০০ পরিবার।

গতকাল (মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট) ফজরের নামাজের পরপরই নদীগর্ভে বিলীন জাজিরার পদ্মাপাড়ের আলমখা কান্দি জামে মসজিদের দোতলা ভবন। নদী তীরে পড়ে আছে মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের জিরো পয়েন্ট এলাকার শেষের ৩০ মিটারসহ বিলীন হয় ১১০ মিটার এলাকা। এ চিত্রই বলে দেয় পদ্মার ভয়াল রূপ।

গত ৭ জুলাই থেকে অব্যাহত ভাঙনে ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে দোকানপাট, গাছপালা সবকিছুই নদীতে হারিয়ে গেছে। ভাঙনের তীব্রতায় যার যা আছে তা নিয়ে নিরাপদ আশ্রয় ছুটছেন ভাঙন কবলিত মানুষ। এরইমধ্যে, বিলীন হয়ে গেছে পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধসহ এক কিলোমিটার এলাকা। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এমন ভাঙন, অভিযোগ নদীপাড়ের মানুষের।

ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন জানান, সকালেও এ মসজিদে নামাজ পড়ানো হয়েছে। এরপরেই ভাঙন শুরু হয়েছে। এখন পুরোটাই ভেঙে গেছে। এখন মসজিদের পেছনের ঘরগুলো নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বসতঘর আর দোকানসহ অন্তত ৪০টি স্থাপনা। আশ্রয়হীন ২৮০টি পরিবার। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। পরিবারগুলোর দাবি, দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ আর বসবাসের জন্য এক টুকরো জমি।

এলাকাবাসী জানান, সব ভেঙে চলে গেছে নদী গর্ভে। এখন আশ্রয়হীন মানুষগুলোর খোলা আকাশের নিচে ভিজতে হচ্ছে। যাওয়ার জায়গা নেই, উপার্জনের মাধ্যম নেই।

আরও পড়ুন:

ঝুঁকির কথা আগেই জেনেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। জরিপের এমন তথ্য লিখিতভাবে জানিয়েছিল বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তা আমলে নেয়নি বিবিএ। তারা সাফ জানিয়ে দেয় এ কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়। ভাঙন প্রতিরোধে এখন আপৎকালীন বালু ভর্তি জিও ব্যাগই একমাত্র ভরসা, বলছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান বলেন, ‘এখানে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা সম্ভব না। পাশাপাশি আমাদের একটি প্রকল্পেরও প্রস্তাবনা রয়েছে। এ জায়গাটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এখান থেকে শুরু করে একদম পদ্মা ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটারের মতো। একি জায়গায় একাধিক সংগঠন থাকতে পারে না। স্বচ্ছতার কারণেই মূলত তাদের অনুমতি না পাওয়ার কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ জায়গাটিকে বাইরে রেখে প্রকল্পের পরিকল্পনা বানায়।’

২০১২-১৩ অর্থবছরে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালের শেষের দিকে বাধঁটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ইএ