তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) পদ্মাসন সিংহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। বিস্তারিত যাচাইয়ের স্বার্থে আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন। তাই জেলা প্রশাসকের কাছে তিন দিনের সময় বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে।’
গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর এবং সংলগ্ন রেলওয়ে বাঙ্কারে ভয়াবহ লুটপাট চলে আসছে। প্রথমে রাতের আঁধারে হলেও পরে দিনের আলোতেও প্রকাশ্যে এ লুট চলে।
স্থানীয়দের দাবি, এ পর্যন্ত অন্তত দেড় কোটি ঘনফুট পাথর লুট হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২০০ কোটির বেশি। একসময় দৃষ্টিনন্দন পর্যটন এলাকা এখন প্রায় পাথর শূন্য। আর রেলওয়ে বাঙ্কার ধসে পড়েছে খানাখন্দে।
দেশজুড়ে এ ঘটনায় সমালোচনার ঝড় ওঠার পর জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ ১২ আগস্ট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রধান করা হয় পদ্মাসেন সিংহকে। আর সদস্য হিসেবে রাখা হয়- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক আফজারুল ইসলাম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তার দায়িত্বকালে লোক দেখানো অভিযান আরও শিথিল হয়ে গেছে, এবং সে সুযোগে লুটপাটকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এ ছাড়া প্রতিদিন পাথর কোয়ারি থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের নামে টাকা উত্তোলন করা হয়।
পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, যাদের গাফিলতিতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট হয়েছে, তাদের দিয়ে তদন্ত করলে সত্য উদঘাটন সম্ভব নয়। পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা আক্তার বলেন, ‘যার ব্যর্থতায় লুট হলো, তাকেই আবার তদন্তে বসানো জনগণের সঙ্গে তামাশা ছাড়া কিছু নয়।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক কাশমীর রেজা বলেন, ‘প্রশাসনের নাকের ডগায় লুটপাট হয়েছে। যোগসাজশ ছাড়া দিনের পর দিন এমন লুটপাট সম্ভব নয়।’
জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, ইউএনও এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে সাচিবিক দায়িত্ব পালনের জন্য।
জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত আছে, যা তদন্তে কাজে দেবে। যদি কারও গাফিলতি প্রমাণিত হয়, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’