২০২২ সালে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শতক ছাড়িয়ে যায় চিনির দাম। এরপর নানা অস্থিরতায় পড়ে পণ্যটির বাজার। দাম গিয়ে ঠেকে ১৪৫ টাকায়। চিনির মিষ্টি স্বাদ অনেকটা তেতো হয়ে ওঠে সাধারণ ভোক্তাদের কাছে। বিভিন্ন সময় শুল্কে ছাড় দিয়ে সরকার দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। বিশ্ব বাজারে পণ্যটির দাম কমলেও দেশের চিত্র ছিল উল্টো।
প্রায় ৩ বছর পর এবার পাইকারিতে চিনির দাম নেমে এসেছে একশ টাকার নিচে। খাতুনগঞ্জে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপ চিনির বাজার পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করলেও এখন অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও চিনি আমদানি ও বাজারজাত করছেন। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় কমেছে দাম।
চট্টগ্রাম,খাতুনগঞ্জ মেসার্স জিরি এন্টার প্রাইজ স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ব্রাজিলে চিনির দাম কমেছে। আমাদের এখানে ফ্রেশগ্রুপের চিনি বেচাকেনা চলে। সামনে বাজার ঊর্ধ্বগতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
পাইকারিতে চিনির দাম ১০০ টাকার নিচে নামলেও খুচরায় এখনো গুনতে হচ্ছে একশ টাকার উপরে। স্থান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০২ থেকে ১০৫ টাকায়। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক মাসের ব্যবধানে চিনির দাম কেজিতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
আরও পড়ুন:
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে দামও কমে গেছে আর সরবারহও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে।
চিনির আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রধান চিনি রপ্তানিকারক দেশ ব্রাজিলে উৎপাদন বেড়েছে। গেলো বছরের তুলনায় চার শতাংশ পর্যন্ত চিনির উৎপাদন বাড়িয়েছে দেশটি। আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছরের তুলনায় চিনির দাম টন প্রতি কমেছে প্রায় একশ ডলার।
চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতি সাবেক সাধারণ সম্পাদক এহসান উল্লাহ জাহেদী বলেন, ‘বিশ্ব বাজারে যখন দাম কমতে শুরু করেছে তখনই মাদের দেশেও দাম কমতে শুরু করেছে। এতেই বোঝা যায় এখানে কোনো সিন্ডিকেট নেই।’
দেশে প্রতি বছর চিনির চাহিদা প্রায় ২২ লাখ টন। জাতীয় রাজস্ববোর্ডের তথ্যমতে গেলো বছর চিনি আমদানিতে খরচ হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি।