ভোলায় স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামী ও দেবরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আদালত চত্বর
আইন ও আদালত
এখন জনপদে
0

ভোলায় চাঞ্চল্যকর স্ত্রী ও সন্তানকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় স্বামী এবং দেবরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। অপর দিকে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া শ্বশুরকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। আজ (বুধবার ৩ সেপ্টেম্বর) ভোলার চরফ্যাশন চৌকি আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত হোসাইন এই রায় প্রদান করেছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, জমির বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের স্ত্রী সন্তানকে হত্যা করেছেন চরফ্যাশন উপজেলা চরফ্যাশন উপজেলার চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের চরআফজাল গ্রামের হান্নান মাঝির ছেলে মাহাবুব আলম ওরফ মফু আলম (৪৮)। এতে সহযোগিতা করেন মাহাবুবের ছোট ভাই ইব্রাহিম (৩৫)।

মান্নান মাঝির পরিবারের সাথে প্রতিবেশী মিলন নক্তির জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ মিলন নক্তিকে ফাঁসাতে ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ রাতের বেলা নিজ বসত ঘর ঘুমন্ত স্ত্রী জাহানারাকে জবাই করে হত্যা করেন স্বামী মাহাবুব আলম এবং তার ভাই ইব্রাহিম।

এসময় জাহানারার পাশে ঘুমিয়ে থাকা ছেলে আবির (৮) জেগে যায় এবং ঘটনাটি দেখে ফেলে। এজন্য আবিরকেও হত্যা করা হয়। তাদের লাশ বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে রাখে।

আরও পড়ুন:

হত্যার দায় মিলন নক্তির ঘাড়ে চাপানোর উদ্দেশ্যে ইব্রাহিম তার বড় ভাই এবং জাহানারার স্বামী মাহাবুবকে ঘরের সামনে একটি গাছের সাথে বেঁধে রাখে। এরপর ইব্রাহিম ডাক চিৎকার শুরু করে আর বলতে থাকে মিলন নক্তি জাহানারা ও আবিরকে হত্যা করে পালিয়েছে।

তবে নিহত জাহানারার বাবা মো. সৈয়দ আলী চৌকিদার বাদি হয়ে জাহানারার স্বামী মাহাবুব আলম, মাহাবুবের ভাই ইব্রাহিম এবং তাদের পিতা মান্নান মাঝিসহ ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

চরফ্যাশন থানা পুলিশ তদন্ত শেষে মাহাবুব আলম, মাহাবুবের ভাই ইব্রাহিম এবং তাদের পিতা মান্নান মাঝি এই তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।

বাদীপক্ষ নারাজি জানালে আদালত পুনরায় ডিবি পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। ডিবি পুলিশ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩০ জানুয়ারি ওই তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।

মামলার প্রধান আসামি মাহাবুব আলম আদালতে দোষ স্বীকার করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ প্রধান আসামি মাহাবুব আলম এবং তার ছোট ভাই ইব্রাহিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন।

সেই সঙ্গে প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। অপর দিকে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের পিতা মান্নান মাঝিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

সেজু