সর্বশেষ চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের ভোট হয়েছিল ২০১৩ সালে। এরপর গত এক যুগে পাঁচটি পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় অনেকটা বিনা ভোটে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সাবেক এমপি এমএ লতিফ ও এফবিসিআই’র সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম চট্টগ্রাম চেম্বারকে পারিবারিক চেম্বারে পরিণত করেছিলেন। যোগ্য নেতৃত্ব না থাকায় চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি শতবর্ষী এ বাণিজ্য সংগঠন।
গুরুত্বপূর্ণ এ বাণিজ্য সংগঠনের নির্বাচনে অংশ নেয়া দুটি প্যানেলের মধ্যে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের নেতৃত্বে আছেন বিজিএমইএ ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম নুরুল হক। অন্যদিকে ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এফবিসিআই ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমিরুল হক।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজনৈতিক ও পারিবারিক বলয় থেকে বেরিয়ে আগামী দিনে চট্টগ্রাম চেম্বারকে ব্যবসায়ীদের প্লাটফর্ম হিসেবে দেখতে চান তারা।
চট্টগ্রাম মহানগর দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী বলেন, আমরা চাচ্ছি চট্টগ্রাম চেম্বারে এমন লোক আসুক যারা সরকারের সঙ্গে বার্গেনিং করে। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বিভিন্ন দাবি দাওয়া পূরণ করে।’
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়ৎদার কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এহসান উল্লাহ জাহেদী বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে দেখেছি যে দলের পছন্দের ব্যক্তিকেই চেম্বারে বসানো হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে পারতেন না সেটি যেন না হয়।’
আরও পড়ুন:
২৪টি পরিচালক পদের মধ্যে ট্রেড গ্রুপ ও টাউন অ্যাসোসিয়েশনের ছয় পরিচালক পদ নিয়ে দুই প্যানেলের মধ্যে বিরোধ চললেও নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত দুই প্যানেলের প্রার্থীরা। চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানীতে রূপান্তরের উদ্যোগ, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় নীতি ও প্রশাসনিক সংস্কারসহ ইশতেহারে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার কথা বলছে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ।
সম্মিলিত ব্যবসায় পরিষদের প্যানেল লিডার এস এম নুরুল হক বলেন, ‘আমরা একটি ডাটা সেন্টার করব। এআই স্টাবলিশমেন্ট করব। যেখানে রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট হবে। এবং এক্সিকিউশনের জন্য আলাদা ফ্লোর থাকবে।’
ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের প্যানেল লিডার এস এম আমিরুল হক বলেন, ‘সারা দেশের ব্যবসায়ীকে কাস্টম বোর্ডের সঙ্গে এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসা। চট্টগ্রামে অনেক কষ্টের বিষয় আছে। কালুরঘাট সেতুতে টোল অন্যতম। দেশের ৩৬টি হাইওয়েতে কোনো স্কেল নেই চট্টগ্রামে স্কেল থাকবে কেন?’
ভোটাররা বলছেন, দুই প্যানেলে যোগ্য প্রার্থী থাকায় এককভাবে নিরঙ্কুশ বিজয়ের সুযোগ নেই। চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই এবার ব্যবসায়ীরা নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এম এ মান্নান বলেন, ‘যারা ভোটার তারা কিন্তু অনেক চালাক। দীর্ঘদিন পরে ব্যালট যখন পাবে অনেক চিন্তা ভাবনা করে সেখানে সিল মারবে।’
নির্বাচনে ৬ হাজার ৭০০ জন ব্যবসায়ী ভোট দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ২৪ পরিচালক পদের মধ্যে ১২ জন সাধারণ, ৬ জন সহযোগী শ্রেণি এবং ৩ জন করে টাউন অ্যাসোসিয়েশন ও ট্রেড গ্রুপ থেকে পরিচালক নির্বাচিত হন। কিন্তু ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের প্যানেল লিডারসহ ছয় পরিচালক টাউন ও ট্রেড গ্রুপ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে থাকলেও বিরোধী প্যানেলের রিটের কারণে এ দু’শ্রেণির পরিচালক পদ নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি।





