মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে লালখা এলাকার একটি ড্রেন থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় জনির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপরই শুরু হয় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা। তদন্তে নামে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রাতের আঁধারে জনির মরদেহ একটি বস্তায় ভরে একজন ব্যক্তি মাথায় করে ড্রেনে ফেলে যাচ্ছে। ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে নিহতের বাবার চেহারার মিল পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, বুধবার (১৮ জুন) রাতে নিহত জনির বাবা করুনা সরকার (৫৩) ও মা অনিতা রানী সরকার (৪৮)-কে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং বিস্তারিত বিবরণ দেন।
তিনি আরও জানান, নিহত জনি সরকার দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ছিলেন এবং প্রায়ই বাবা-মাকে টাকার জন্য নির্যাতন করতেন। সোমবার (১৬ জুন) রাতেও টাকার জন্য ঝগড়া হয়। সেদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে জনি ঘুমিয়ে পড়লে বাবা-মা মিলে পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকাণ্ড চালান।
প্রথমে রুটি বানানোর কাঠের বেলন দিয়ে মাথায় ও মুখে আঘাত করে জনিকে অচেতন করা হয়। পরে শ্বাসরোধ করে নিশ্চিত করা হয় তার মৃত্যু। রাত ২টার দিকে মরদেহ একটি বস্তায় ভরে বাবা নিজেই মাথায় করে নিয়ে গিয়ে লালখার মোস্তফার বাড়ির গলির ড্রেনে ফেলে দেন।
পরদিন হত্যার নাটক সাজাতে নিহতের বাবা নিজেই অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে পুলিশের হাতে আসে সিসিটিভি ফুটেজ এবং একপর্যায়ে উঠে আসে নির্মম হত্যাকাণ্ডের সত্যতা।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘটনায় ব্যবহৃত বেলন ও বস্তা জব্দ করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং বিস্তারিত তদন্ত অব্যাহত আছে।