পাম্পের আড়ালে অবৈধ গ্যাস কারখানা, ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
এখন জনপদে
অপরাধ
0

ফরিদপুরে তেল ও গ্যাস পাম্পের আড়ালে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে গ্যাস কারখানা। বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির নাম ও লোগো ব্যবহার করে বোতলজাত (সিলিন্ডার) করে বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে এবং বাজার থেকে হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বাসাবাড়িতে চলে যাচ্ছে। এতে বিস্ফোরণসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

এমন খবর পেয়ে গত শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে ফরিদপুরের তরুণ স্বেচ্ছাসেবীদের কয়েকজন ওই ফিলিং স্টেশনে গিয়ে বিষয়টি হাতেনাতে ধরেন। পরে প্রশাসনকে অবগত করলে গতকাল (রোববার, ৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে ওই প্রতিষ্ঠানটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

ফিলিং স্টেশনটির নাম মেসার্স তোফাজুদ্দিন ফিলিং স্টেশন ও এলপিজি গ্যাস স্টেশন। এটি নগরকান্দা উপজেলার মহিলারোড এলাকায় ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের পূর্ব পাশে অবস্থিত।

ওই প্রতিষ্ঠানটির পেছন দিকে ইটের দেয়াল তৈরি করে গোপনীয়ভাবে মোটরযানের ব্যবহারের জন্য এলপি গ্যাস খালি সিলিন্ডারে ভরে অবৈধভাবে বাজারজাত করে আসছিল।

ওই স্বেচ্ছাসেবী তরুণদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ফিলিং স্টেশনে প্রতি লিটার এলপি গ্যাস বিক্রি হয় ৬৭ টাকা দরে। বসতবাড়িতে ব্যবহার করা ১৩ কেজি ওজনের সিলিন্ডার বিক্রি হয় এক হাজার তিনশ’ টাকা করে। সে হিসেবে ওই ফিলিং স্টেশন প্রতি সিলিন্ডার ভরে ৮৭১ টাকা খরচ হতো এবং তা বাজারের দামে ১৩ কেজি ওজনের গ্যাস বিক্রি করে অবৈধভাবে প্রতি সিলিন্ডার বাবদ ৫২৯ টাকা বাড়তি লাভ করতো। পাশাপাশি পাম্পের গ্যাস সিলিন্ডারে ভরার প্রক্রিয়াটাও ছিল বিপদজনক।

আরও পড়ুন:

ওই এলাকার বাসিন্দা, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গভীর রাতে খোলা আকাশের নিচে বসুন্ধরা, ওমেরা, সেবাসহ বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির লোগো সাঁটানো গ্যাসের শতাধিক সিলিন্ডারে প্রবেশ করা হচ্ছিল। এটি দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানটিতে সেনাবাহিনী, প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৪২ ধারায় এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ১৮৮৪ এর ৭(১) ধারায় মেসার্স তোফাজুদ্দিন ফিলিং স্টেশন ও এলপিজি গ্যাস স্টেশনের মালিককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দবির উদ্দিন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির গ্যাস সংরক্ষণ ও যানবাহনে প্রদান করার লাইসেন্স রয়েছে তবে সিলিন্ডারের মাধ্যমে বাজারজাত করার লাইসেন্স নেই। প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় জরিমানা করা হয়েছে এবং সতর্ক করা হয়েছে।’

ফরিদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ আনোয়ার বলেন, ‘এভাবে গ্যাস বোতলজাত করা পরিবেশের জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো পাম্প থেকে গ্যাস বোতলজাত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র নিতে হয়। ওই প্রতিষ্ঠানটি যাতে কোনো ছাড়পত্র দেখাতে পারেনি। গ্যাস বোতলজাত করার জন্য বিস্ফোরক অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়।’

এসএস