তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ধনবাড়ীর নাথেরপাড়া গ্রামে মামুন মিয়ার জমিতে টাইলস মিস্ত্রি রফিকুল ইসলামের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত এবং ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি রফিকুল ইসলামের মা ছাহেরা বেওয়া (৫৮) বাদী হয়ে ধনবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও মূল রহস্য উদঘাটিত না হওয়ায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে মাধ্যমে মামলাটি ওই বছরের ২৫ জুলাই পিবিআই টাঙ্গাইলের ওপর মামলার তদন্তভার অর্পিত হয়।’
মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘পিবিআইয়ের চৌকস টিম প্রথাগত এবং প্রযুক্তিগতভাবে মামলাটি তদন্ত করতে শুরু করেন। পিবিআই টিম তদন্তকালে জানতে পারেন রফিকুল কিছুটা উশৃঙ্খল প্রকৃতির ছিল। সে কাউকে মান্য করতেন না এবং চুরির সঙ্গেও যুক্ত ছিল। তাছাড়া সে তার মামার বাড়ির মায়ের ওয়ারিশের সম্পত্তি কড়ায়গণ্ডায় একাই বুঝিয়ে নেয়ার জন্য চেষ্টা করলে তার মামা ও মামাতো ভাইদের সঙ্গে চরম বিরোধের সৃষ্টি হয়। অপর দিকে রফিকুল ইসলামের মামা রেহান আলীর বাড়ী হতে পর পর কয়েকবার গরু চুরি হলে তারা রফিকুলকে সন্দেহ করে।’
আরও পড়ুন:
তিনি বলেন, ‘এছাড়া রফিকুলের সঙ্গে তার ভাই হাফিজুরের সঙ্গেও জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তাছাড়া অত্র মামলার গ্রেপ্তারকৃত আসামি মকবুল রফিকুলের বোন জামাই। সে দীর্ঘদিন যাবৎ রফিকুলদের বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। রফিকুল বিষয়টি ভালো চোখে দেখতো না এবং এ মামলার ঘটনার কিছুদিন আগে সে মকবুলের ঘর ভেঙে দেয়। ফলে মকবুলের সঙ্গেও রফিকুলের বিরোধের সৃষ্টি হয়।’
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বলেন, ‘এসআই মো. আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ঘটনার পর হতে পলাতক আসামি মকবুলের অবস্থান নির্ণয়ের জন্য টাঙ্গাইলে ধনবাড়ীসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান অব্যাহত রাখেন। অব্যাহত অভিযানের এক পর্যায়ে গত রোববার (১২ অক্টোবর) রাতে নাথের পাড়া এলাকায় আসামি মকবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন কলা কৌশল প্রয়োগ করলে এক পর্যায়ে সে মামলার ঘটনার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে এবং অন্যান্য আসামিদের সম্পৃক্ত করে আদালতে ১৬৪ ধারা মতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করে।’
গতকাল (সোমবার, ১৩ অক্টোবর) মকবুলকে আদালতে পাঠানো হলে স্বেচ্ছায় সে আদালতে মামলার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে এবং অন্যান্য আসামিদের সম্পৃক্ত করে আদালতে ১৬৪ ধারা মতে বিস্তারিত দোষ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন বলে জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন তালুকদার।





