২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের ওষুধ শিল্প বা ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের বাজারমূল্য ছিল পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই অংক দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ১৩ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। বিশ্ববাজারে অনুমোদিত ওষুধ সরবরাহে শীর্ষ ভারত; মোট বৈশ্বিক রপ্তানিতে দেশটির অবদান ২০ শতাংশের বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ঘোষণায় অনিশ্চয়তা ঘিরে ফেলেছে ভারতের ফার্মাসিউটিক্যাল খাতকে। সংশ্লিষ্টদের শঙ্কা, সাধারণের হাতের নাগালে থাকা অনুমোদিত ওষুধের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সুলভ ওষুধের অর্ধেক এবং রোগীকে চিকিৎসকের পরামর্শে উল্লেখিত প্রতি ১০টি ওষুধের নয়টিই ভারতে উৎপাদিত।
আরো পড়ুন:
ভারতের ওষুধ উৎপাদক অমিত বাজাজ বলেন, ‘বিকল্প খুঁজতে হবে ভারতীয় উৎপাদনকারীদের। অন্য দেশের দিকে নজর দিতে হবে। আমরা সারা বিশ্বেই ওষুধের যোগান দিচ্ছি। সারা বিশ্বে সরবরাহকৃত ওষুধের এক-তৃতীয়াংশই ভারতের। তাই ভারসাম্য বজায় রেখে নতুন পথ খুঁজে বের করতে হবে আমাদের।’
মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ'র বিধি মেনে ভারতের মাটিতে প্রায় ৭শ' কারখানায় উৎপাদিত ওষুধ পৌঁছায় মার্কিন ভোক্তাদের হাতে। মার্কিন শুল্কের হুমকিতে এই উৎপাদনকারীদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত শুল্কের তালিকায় ভারতীয় ওষুধ না থাকলেও মার্কিন ওষুধ আমদানিতে প্রায় ১০ শতাংশ শুল্ক বিদ্যমান রেখেছে ভারত। ট্রাম্প প্রশাসনের পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যে বহাল আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান দেশটির ওষুধ শিল্প সংশ্লিষ্টদের।
আরো পড়ুন:
ভারতের ওষুধ উৎপাদক সমিতির ইমিডিয়েট পাস্ট ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ভিরাঞ্চি শাহ বলেন, ‘আমাদের খুব বেশি পরিমাণে ওষুধ আমদানি করতে হয় না। ক্যানসারসহ প্রায় সব ধরনের জটিল রোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ আমরাই উৎপাদন করে থাকি। তাই অন্য দেশ থেকে ভারতে যেসব ওষুধ আসছে, সেগুলোতে শুল্ক শূণ্যে নামিয়ে আনলেও ভারতের রোগীদের তাতে অসুবিধা হবে না।’
বহির্বিশ্বের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক যুদ্ধে গতি বাড়বে অভ্যন্তরীণ মার্কিন উৎপাদন শিল্পে, দাবি ট্রাম্প প্রশাসনের। তবে স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল সংশ্লিষ্টদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের কারখানা স্থাপনে গলাকাটা পর্যায়ে বাড়বে ওষুধের খরচ। বিশ্লেষকরাও বলছেন, ভারতের রপ্তানিযোগ্য ওষুধে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপে দাম যেমন বাড়বে, তেমনি ভোক্তা পর্যায়ে এসব ওষুধ পৌঁছাতেও পার করতে হবে বড় বাধা।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশেও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্যের সবচেয়ে বড় চালান আসে ভারত থেকে। কাঁচামাল থেকে শুরু করে ওষুধ শিল্পে প্রয়োজনীয় সবকিছুর জন্য ভারতের পরই চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশ। ফলে ওষুধ শিল্পের ওপর মার্কিন শুল্কের প্রভাব পড়তে পারে দেশের বাজারেও।