এই কর্মসূচিতে সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন এবং সংশ্লিষ্টরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। দেশের স্বার্থে রাজস্ব ব্যবস্থার একটি যুগোপযোগী ও টেকসই সংস্কার অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই দীর্ঘদিন যাবৎ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের এ দাবি।
ঐক্য পরিষদ মনে করে, সংস্কারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হওয়া সত্ত্বেও কাস্টমস ও ট্যাক্স সার্ভিসের হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতামত গ্রহণ না করে, সরকারের গঠিত সংস্কার কমিটির সুপারিশ প্রকাশ না করে এবং তা আলোচনা-পর্যালোচনার সুযোগ না রেখে জারি করা অধ্যাদেশের মাধ্যমে যে সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে, তা দেশের রাজস্ব ব্যবস্থায় বিপর্যয় সৃষ্টি করবে।
এরই প্রেক্ষিতে আজকের কলম বিরতি কর্মসূচিতে সবাই অংশগ্রহণ করেছেন উল্লেখ করে অংশগ্রহণকারী সবার প্রতি এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। পাশাপাশি যৌক্তিক দাবির বিষয়ে সাংবাদিক, মিডিয়া, সুশীল সমাজসহ সবার যে অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল, সেজন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য ঐক্য পরিষদ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে এবং তাদের এই সাময়িক ত্যাগ, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে ও রাজস্ব ব্যবস্থার টেকসই সংস্কারে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করা হয়।
তারা জানান, দাবি আদায় হলে তারা নির্ধারিত অফিস সময়ের বাইরে অতিরিক্ত সময় কাজ করে অনিষ্পন্ন কাজ সম্পন্ন করবেন।
আরো জানানো হয়, তারা সংস্কারের পক্ষে এবং সংস্কার চায়। রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা পৃথক হোক, এ বিষয়েও তারা ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন এবং বলা হয়, এ বিষয়ে তাদের কোনো বিরোধ নেই। তবে সংস্কার হতে হবে বাস্তবমুখী, অংশীজনের মতামতভিত্তিক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ মূল্যায়নের মাধ্যমে।
তাদের এই আন্দোলন বরাবরই একটি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন ছিল বলে তারা দাবি করেন। এছাড়া গতকাল (শুক্রবার,১৬ মে) বহিরাগত অনুপ্রবেশ করানোর মাধ্যমে আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আপনারা জানেন, সাধারণ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের অনির্বাচিত নির্বাহী কমিটিকে অবৈধ ও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে, বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির প্রায় সকল সদস্য পদত্যাগ করায় এটিও অকার্যকর হয়ে পড়েছে। সুতরাং, এই দুই অ্যাসোসিয়েশন এখন আর এই দুই ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের প্রতিনিধিত্ব করে না। এমতাবস্থায়, বিলুপ্ত ও অকার্যকর এই দুই কমিটির নামে যেকোনো বক্তৃতা বা বিবৃতি ব্যক্তিগত বলে গণ্য হবে।’
আগামীকাল (রোববার, ১৮ মে) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা কলম বিরতি চলবে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘পূর্বের মতোই আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি কার্যক্রম এবং জাতীয় বাজেট প্রণয়ন কার্যক্রম এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। আগামীকালের প্রেস ব্রিফিং দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্রিফিংয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
সবশেষে জানানো হয়, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তারা এই অচলাবস্থার নিরসন চায়। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় সরকার তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন এবং কোনো মিডিয়ার মাধ্যমে তারা আলোচনার খবর পাবার আশা ব্যক্ত করেন এবং জানান আলোচনার দরজা তাদের দিক থেকে সবসময়ই খোলা ছিল, আছে এবং থাকবে।—প্রেস বিজ্ঞপ্তি