কোরবানির পশুর চামড়া বাজারে এবারও ধস, বকেয়া থাকায় বিনিয়োগ কম

কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে এবার ধস নেমেছে
অর্থনীতি
0

কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে এবারও ধস নেমেছে। ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে গরুর চামড়া। ক্রেতা নেই ছাগল ও ভেড়ার চামড়ার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে তাদের কোটি কোটি টাকা বকেয়া থাকায় এবার বিনিয়োগ করেননি অনেক ব্যবসায়ী।

শেষ মুহূর্তেও ক্রেতার দেখা না মেলায় বগুড়ার চামড়া গুদাম এলাকায় চামড়া বিক্রি করতে আসেন অনেকেই। ফলে ক্রেতা সংকটে দিনভর বাড়ির উঠান ও মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে পড়ে ছিল কোরবানির পশুর চামড়া।

বাদুরতলা চামড়া গুদাম এলাকায়, গরুর চামড়ার কিছুটা দাম পেলেও মূল্যহীন ছাগলের চামড়া। কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় চরম অসন্তোষ বিক্রেতারা।

তারা জানান, আমরা চামড়া কিনেছি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা করে। অথচ এখানে বিক্রি করেছি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। চামড়া কিনে ২০০ টাকা করে লস হচ্ছে। আর খাসির চামড়া কোন দামই দিচ্ছে না। ৫ টাকা পিস হিসাবে চাচ্ছে।

আগের ঈদগুলোতে জেলায় ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনার জন্য মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অর্থ সরবরাহ করলেও এবছর চামড়ার বাজার ভালো না হওয়ায় বিনিয়োগ করেননি অনেক ব্যবসায়ী। মৌসুমি ব্যবসায়ী যারা চামড়া কিনেছেন, বিক্রি করতে এসে তাদেরও মূলধন হারানোর দশা।

তারা জানান, আমাদের এখানে চামড়া কেনার মতো কোন লোক যায় নি৷ তাই আমরা নিয়ে এসেছি বিক্রি করতে। অথচ এখানেও কেনার কেউ নেই। আমরা টেলিভিশনে দেখেছি সর্বনিম্ন ১ হাজা ৩০০ টাকা করে এখানে এসে দেখি ৫০০ থেকে ৬০০ করে দাম উঠেছে।

আরেক মৌসুমি ব্যবসায়ী বলেন, ‘বউয়ের গয়না বিক্রি করে চামড়া কিনেও লস। অবস্থা খুব খারাপ।’

একই অবস্থা নাটোরের কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারেও। সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনছেন না কোনো আড়ৎদারই। যার যার ইচ্ছা মতো দাম হাঁকিয়ে চামড়া কিনছেন তারা।

নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, ‘ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত চামড়া ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকা করে বেচাকেনা হলেও আমাদের এখানে কাঁচা চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। সরকারের বেঁধে দেয়া দামের চেয়েও বেশি বিক্রি হচ্ছে।’

ঈদুল আজহার মৌসুমে দেশে যে পরিমাণ চামড়া সংগ্রহ করা হয় তার ২০ থেকে ৩০ ভাগ পূরণ করে নাটোরের চামড়া। এ বছর প্রায় ৫ লাখ গরুর চামড়া সংগ্রহ করার লক্ষ নির্ধারণ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

ইএ