ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন যে কয়েকটি পণ্য রপ্তানি হয় তার অর্ধেকই হিমায়িত মাছ। প্রতিকেজি আড়াই মার্কিন ডলারে পাঙ্গাশ, পাবদা, রুই, কাতল ও ট্যাংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ যায় ভারতে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৫১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার পণ্য। যার মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, সিমেন্ট, প্লাস্টিক, প্রক্রিয়াজাত খাবার, তুলা, ভোজ্য তেল, আটা ও ময়দাসহ বিভিন্ন পণ্য। সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক ও প্রক্রিয়াজাত খাবার। একইসময়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে সাত কোটি ৩১ লাখ ৮২ হাজার টাকার জিরা, ডাল ও কাজুবাদাম।
তবে গেল মে মাসে ত্রিপুরা, আসাম, মিজোরাম ও মেঘালয়ের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে বাংলাদেশে থেকে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাবার, জুস, তুলা, প্লাস্টিক, পিভিসি সামগ্রী ও কাঠের ফার্নিচার আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। এসব পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক ও কাঠের ফার্নিচার ছাড়া বাকি সবকটি পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হতো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যা মোট রপ্তানি বাণিজ্যের অর্ধেক।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশ থেকে ছয় ধরনের পণ্য আমদানিতে ভারতীয় নিষেধাজ্ঞার কারণে অন্তত ৩০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বন্দরের রপ্তানি বাণিজ্য। বাণিজ্য সচল রাখতে তাই সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ চান তারা।
তারা জানান, ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে অনেক লোক বেকার হয়ে গেছে। নিষিদ্ধ পণ্য ছাড়া বাকি সব ধরনের পণ্য রপ্তানি করার অনুমতি পেলে এ বন্দর আবার সচল হতো বলে মনে করছেন তারা।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারতে নিষেধাজ্ঞার কারণে গেল অর্থবছরের শেষ দিকে রপ্তানি বাণিজ্য কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বন্দরের মাশুল আদায় কার্যক্রমে। তবে নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকা পণ্যগুলোর রপ্তানি বাড়ানোর পরামর্শ এই কর্মকর্তার।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আগে যে পরিমাণ বন্দর মাশুল আদায় হতো আমাদের এখন ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে এ বন্দর মাশুলটা কমে এসেছে আগের চেয়ে।’
বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য রপ্তানির অনুমোদনের বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এখতিয়ার জানিয়ে নতুন অর্থবছরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বাড়বে বলে আশা শুল্ক বিভাগের।
আখাউরা স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার রীমা আক্তার বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে বিষটা অবহিত করেন। রাজস্ব বোর্ড থেকে আমরা কোনো নির্দেশনা পাই তখন ওই অনুযায়ী কাজ করতে পারবো।’
১৯৯৪ সাল থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে চলছে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। বন্দর দিয়ে পারাপার হওয়া যাত্রীদের ভ্রমণ করও সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎস।