গেল বছরের জুনে সীমিত পরিসরে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল বা পিসিটির কার্যক্রম শুরু করে বিদেশি অপারেটর সৌদি আরবের রেড সি গেইটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল। পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি না থাকায় শুরুতে শুধু রপ্তানি কনটেইনারগুলো জাহাজে তুলতো অপারেটর। গেল মে মাস থেকে রপ্তানির পাশাপাশি আমদানি কনটেইনারও হ্যান্ডলিং ও ডেলিভারির কাজ শুরু করে পিসিটি।
প্রত্যাশা ছিল বিদেশি অপারেটরের ব্যবস্থাপনায় পণ্য ডেলিভারি দ্রুত হবে, বাড়বে সেবার মান। অথচ, কার্যক্রম শুরু হতে না হতেই দেখা দেয় সমস্যা।
বন্দর ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, মে মাসে রেড সি গেইটওয়ে আমদানি হ্যান্ডলিংয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর, গেল দুই মাস ধরে জনবল ও যন্ত্রপাতি সংকটে টার্মিনালে চরম অব্যবস্থাপনা দেখা দিয়েছে।
ফলে পিসিটি থেকে পণ্য ডেলিভারি নিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জাহাজ থেকে কনটেইনার উঠানো-নামানো ও আমদানি পণ্য ডেলিভারির চাপ সামলাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এতে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা, আমদানিকারককে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত জরিমানা।
আরও পড়ুন:
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, ‘একজন জেটি সরকার যদি পিসিটিতে ঢুকে সে ডেলিভারি দিয়ে কখন বের হবে সেটার ঠিক নেই। এক্ষেত্রে আমাদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’
যথাসময়ে কাঁচামাল হাতে না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাত। সেখানে চার্জ বেশি গুণতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
বিজিএমইএয়ের পরিচালক সাইফ উল্লাহ মনসুর বলেন, ‘একদিকে আমরা প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছি না। আর হয়রানির শিকার হচ্ছি। যার কারণে আমরা সময় মতো ফেব্রিকের জিনিস পাচ্ছি না।’
আমদানির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দু’একটি বিদেশি কোম্পানির জাহাজ ভেড়ে এই টার্মিনালে। যার মধ্যে বেশিরভাগই মার্স্ক শিপিং লাইনের। অস্বাভাবিক দেরির বিষয়টি উল্লেখ করে সম্প্রতি পিসিটি থেকে আমদানি পণ্যের কনটেইনার ডেলিভারি না নেয়ার কথা জানিয়ে মার্স্ক কর্তৃপক্ষকে ই-মেইল করেছে চারটি কনটেইনার ডিপো।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের রুহুল আমিন শিকদার মহাসচিব বলেন, ‘পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে বেসরকারি ডিপোগুলো আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার বের করতে গিয়ে কোনো প্রোডাক্টিভিটি নেই। বরং সেখানে অস্বাভাবিক বিলম্ব হচ্ছে। এই বিলম্বের কারণে বেসরকারি ডিপোগুলো পিসিটি থেকে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার আনতে চাচ্ছে না।’
১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার জন্য ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে ২২ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল। এই টার্মিনালে রয়েছে তিনটি কনটেইনার জেটি।