সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। পাশাপাশি কমেছে সবকটি মূল্যসূচক ও লেনদেন। সেই সঙ্গে বড় অঙ্কে কমেছে বাজার মূলধন।
গেলো সপ্তাহের বেশিরভাগ কার্যদিবস অবরোধের মধ্য দিয়ে পার করেছে পুঁজিবাজার। অবরোধের মধ্যেও পুঁজিবাজারের লেনদেন প্রক্রিয়া ছিল স্বাভাবিক। তবে অধিকাংশ দিন লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
গত সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা কমে গেছে। এর মাধ্যমে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন ৯ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমেছে।
সপ্তাহজুড়ে বাজারটিতে ৫০টির বেশি শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৫টির। আর ২১৩ টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম অপরিবর্তিত থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে।
ক্রেতা না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৩ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা বা দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজারে মূলধন কমে ৫ হাজার ৩১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমলো ৯ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা।
এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৪ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গেলো সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি কমেছে ৮ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা দশমিক ৪২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ।
আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গেলো সপ্তাহে কমেছে ৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা দশমিক ২৪ শতাংশ। সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৩৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৭৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৫৯৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ৪২২ কোটি ২৯ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফু-ওয়াং ফুড, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, এমারেল্ড অয়েল, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, জেমিনি সি ফুড, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম, দেশবন্ধু পলিমার, ইয়াকিন পলিমার, প্যাসেফিক ডেনিমস এবং সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে- প্যাসিফিক ডেনিমস, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ,খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, ইভিন্স টেক্সটাইল, দ্য ঢাকা ডাইং, এসকে ট্রিমস, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স ও সেন্ট্রাল ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড।
সাপ্তাহিক দর কমার শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে- জেমিনি সী ফুড, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, এডিএন টেলিকম মুন্নু অ্যাগ্রো, অ্যারামিট, শমরিতা হসপিটাল, ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোডস, জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজ ও কে অ্যান্ড কিউ লিমিটেড।