বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩ হাজার ১১৪ জন। গেলো বছর যা ছিলো ৬ হাজার ১৪৫জন। তবে, এ বছরও এগিয়ে মেয়েরা। ছাত্রদের ৪৮ দশমিক চার পাঁচ শতাংশের বিপরীতে ৬৩ দশমিক তিন আট শতাংশ ছাত্রী কৃতকার্য হয়েছে। এছাড়া বোর্ডের ১৬টি স্কুলের কোন শিক্ষার্থী পাস করেনি।
এসএসসিতে বরিশাল বোর্ডে ২০২৪ সালে পাশের হার ছিলো ৮৯ দশমিক এক তিন শতাংশ। ২০২৩ সালে যা ছিলো ৯০ দশমিক এক আট ভাগ। অথচ এবার এসএসসির ফল প্রকাশের পর হতাশ এই বোর্ডের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী। এবার বোর্ডে পাশের হার ৫৬ দশমিক তিন আট শতাংশ। যা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে যা সবচেয়ে কম।
বিগত বছরগুলোতে এসএসসি পরীক্ষায় অন্যান্য বোর্ডের চেয়ে কখনো এগিয়ে আবার কখনো কাছাকাছি ছিলো বরিশাল শিক্ষা বোর্ড। তবে, এবার গেলো ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে হতাশাজনক ফলাফলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলা ও গণিতের এমসিকিউ এবং সিকিউ প্রশ্ন কঠিন হয়েছিলো। কোচিং ব্যবস্থাকে দায়ী করে তারা বলেন, এখান থেকে বের হতে পারলে আরও ভালো ফলাফল করা সম্ভব।
শিক্ষকরা বলেন, ‘এবার খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোয়ালিটি মেইনটেইনের দিকে বেশি নজর দেয়ার দিকনির্দেশনা ছিলো। আমরা সেভাবেই খাতা মূল্যায়ন করেছি।’
অকৃতকার্যদের বেশিরভাগই আটকেছেন ইংরেজি ও গনিতে। শিক্ষা বোর্ডের ইংরেজি বিভাগের প্রধান পরীক্ষকের মতে, পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষায় অংশ না নেয়া ও নানা কারণে পাঠ বঞ্চিত হওয়ার প্রভাব পড়েছে ফলাফলে।
কাউনিয়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক তাপস কুমার শীল বলেন, ‘ইংরেজি পরীক্ষায় চরাঞ্চলের খাতা আমরা পেয়েছি যেখানে দেখা গেছে ৫০ টা খাতার মাঝে ৫০ জনই ফেল করেছে। তারা পিএসসি এবং জেএসসি এ দুইটা পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করায় হঠাৎ করে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কারণে তাদের রেজাল্টে ধ্বস নেমেছে।’
কাউনিয়া সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম কামরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে সকল বিষয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকার কারণে এবং অভিভাবকগণ সচেতন না থাকার কারণে তাদের শিক্ষা ঝরে যাচ্ছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’
তবে, বোর্ড কর্মকর্তাদের দাবি এবারের পরীক্ষায় ভিজিলেন্স টিমের কড়াকড়ি, খাতা মূল্যায়নসহ শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে।
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জিএম শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা ছিলো যে সঠিক মূল্যায়ন হওয়া দরকার। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মান কী তা জানার জন্য। আপনারা তো দেখেছেন আগে লাখ লাখ শিক্ষার্থী জিপিএ ফাইভ পায় কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করে।’
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, গণিত এবং ইংরেজি বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল থেকে খারাপ হওয়ার কারণে আমাদের পার্সেন্টিজ কমে গেছে।