এ বিষয়ে প্রক্টর রাশিদুল আলম বলেন, ‘ভোটগ্রহণের দিন, এর আগের দিন এবং পরের দিন সেনা মোতায়েনের জন্য সেনাপ্রধানের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মূলত সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করার কথা জানিয়েছি। এখনও সাড়া পাইনি। তবে আমরা আশাবাদী।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘রাষ্ট্রে এখন বিশেষ পরিস্থিতি চলছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীরও ম্যাজিস্ট্র্যাসি পাওয়ার আছে। নির্বাচন কমিশন সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনী থেকে সহযোগিতা চেয়েছে। শুধু সেনাবাহিনীই না বরং পুলিশ, র্যাব, আনসারের কাছেও সহযোগিতা চেয়েছি আমরা।’
চায়ের কাপের ঝড় তুলেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন। ৩৩ বছর পর অবশেষে জাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর। আজ (বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট) দুপুর ২টায় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় শেষ হয়েছে। আর জমা দেয়ার সময় শেষ হয়েছে বিকেল ৪টায়। শেষদিনে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ফরম সংগ্রহ করেন।
আরও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, ফ্যাকাল্টি কিংবা ক্যাফেটেরিয়া, বটতলা, চৌরঙ্গী এখন সরগরম। প্রার্থী, ভোটার, প্যানেল, অধিকার এবং প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলাপের ঝড় আর তর্ক-বিতর্কই যেন ক্যাম্পাসের উৎসব যা ছাত্র রাজনীতির সৌহার্দ্যের প্রতিচ্ছবি।
শিক্ষার্থীরা জানান, খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে বলে আশা করছে সবাই। প্রার্থী যদি ক্লিন ইমেজের হয়, তার এক্টিভিটি যদি শিক্ষার্থীবান্ধব হয় তাহলে সে অবশ্যই এগিয়ে থাকবে। সবাই যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
১১ হাজার ৯১৯ ভোটের বিপরীতে জাকসুতে মোট ২৫টি এবং হল সংসদে ১৩ পদে নির্বাচন হবে। গত সোমবার থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছাত্র সংগঠনের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও লড়ছেন অনেকে।
জাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৎপর ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বাম সংগঠনগুলো। প্যানেল গোছাতে রাত-দিন এক হয়ে বৈঠক করছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, সংগঠনের ইমেজ তার সাথে ব্যক্তি ইমেজ প্রার্থীকে এগিয়ে দেবে। তবে ব্যক্তি ইমেজই এখানে মূল ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহিবুর রহমান বলেন, ‘প্যানেলে ইসলামি ছাত্রশিবিরের পাশাপাশি অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ থাকবেন।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগের স্টাইলে যে রাজনীতি দেখা গেছে যে কিছু সংগঠন এখনও সে রাজনীতি থেকে বের হতে পারেনি। পুরনো কালচার থেকে বের হতে পারেনি। কিন্তু ছাত্রশিবির এখানে ব্যতিক্রম ছিলো।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জল বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটভুক্ত হচ্ছিনা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীদের নিয়েছি যারা অনেকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহবায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, ‘জাকসু এবং হল সংসদের প্যানেল সেটি এরইমধ্যে আমরা চূড়ান্ত করেছি কিন্তু ঘোষণা করিনি। খুব শীঘ্রই আমরা ঘোষণা করবো। আমরা এককভাবে নির্বাচন করবো।’
প্রক্টর ও জাকসু সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘জাকসু এবং হল সংসদের নির্বাচন যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আমরা সচেষ্ট। আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সব ধরনের সভা-সমাবেশ, অনুষ্ঠান, কর্মসূচি ও মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।