ডাকসু নির্বাচনের আচরণ বিধি নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। কারও কারও ব্যানার পোস্টার এখনও আছে ক্যাম্পাসে। এ বিষয়ে কমিশন নিরব থাকার অভিযোগ জানিয়েছে বেশ কয়েকজন প্রার্থী।
একই অভিযোগ আছে ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লার বিরুদ্ধে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, কমিশন এ নিয়ে কোনো ধরনের আপত্তি জানায়নি। করলে তারা তাদের ফেস্টুন সরিয়ে নিবে।
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমাদের কোনোকিছু এখন পর্যন্ত বলা হয়নি। আমরা দেখেছি যে আরও অনেক ছাত্র সংগঠনেরই বিলবোর্ড টিএসসিতে টানানো আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় টানানো আছে। সেগুলো বহাল আছে। সেখান থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে যেহেতু তারা বলেনি কিছু, এটা আসলে ভায়োলেট করছে না। যদি ভায়োলেট করে বলে উনারা, মনে করেন তাহলে অবশ্যই উনারা জানাবেন। জানালে আমরা সেগুলো সরিয়ে নেবো।’
আজ (শনিবার, ২৩ আগস্ট) সকালে অমর একুশে হলে শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী। এসময় ফেইক আইডি দিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে অভিযোগ করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘রোকেয়া হলে আমাদের যে প্যানেল আছে, সে প্যানেলের মেয়েদের যথেষ্ট ডিস্টার্ব করছে প্রতিপক্ষরা। তাদের হল গ্রুপে নানা ধরনের পোস্ট করা হচ্ছে ভোট না দিতে। এমনকি ফেইক আইডি দিয়ে এটা করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান করছি, যারা এ আইডিগুলোর এডমিন, মডারেটর আছে তাদের ডেকে আনেন। ডেকে এনে যদি আপনারা সেগুলো কন্ট্রোল করতে না পারেন তাহলে আইডিগুলোকে ভ্যানিশ করে দেন।’
প্রতিপক্ষরা মেধার যোগ্যতায় না পেরে নানাভাবে আক্রমণ করছে বলে অভিযোগ জানান ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লিডারশিপ কোয়ালিটি, আমাদের সততা, আমাদের ইন্টেগ্রিটি দেখে আমাদের বন্ধুপ্রতিম বা প্রতিপক্ষরা আদর্শিকভাবে কাজের মাধ্যমে, মেধার মাধ্যমে তারা আমাদের মোকাবিলা করতে না পেরে ক্রমাগত আমাদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। আমাদের বোনদের বিরুদ্ধে সাইবার বুলিং করছে। আমরা সবাইকে আহ্বান করছি আসেন আমরা এ ধরনের কাঁদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করি। আমরা প্রতিযোগিতা করি, আমরা মেধার চর্চা করি। আমরা আইডিয়ার প্রতিযোগিতা করি, আমরা আগামীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেমন বিনির্মাণ করতে চাই সে আইডিয়াগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামনে পেশ করি।’
এসময় নারীর শিবির সমর্থিত প্যানেলের নারী প্রার্থীরা সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ জানায়।
প্রার্থীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিন্তু এখনও নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সেই সেফ স্পেস তৈরি করতে পারেনি। নারী ভোটারদের যাদের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, তাদের নিয়ে বিভিন্ন ইস্যু আমাদের কানে এসেছে। তা নিয়ে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট পর্যায়েও ঝামেলা হচ্ছে বলে আমরা জেনেছি। এছাড়া নারী প্রার্থীদের সাইবার বুলিং করা হচ্ছে খুবই জঘন্যভাবে। এখনও আমরা অন্যান্য প্যানেল থেকে এ ধরনের কোনো অ্যাপ্রোচ দেখতে পাইনি যে তারা এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কালো দিবসের আলোচনায় যোগ দেন সকল অংশীজন। এসময় এখন পর্যন্ত ছাত্র সংগঠনগুলোর আচরণ আশাব্যঞ্জক জানিয়ে উপাচার্য জানান, ডাকসু নির্বাচন আয়োজন যেকোনো অবস্থা বা বিবেচনায় চ্যালেঞ্জিং।
অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি, সবার জন্য একটি ভালো পরিবেশ তৈরি করে এগিয়ে যেতে। সমস্যা যেখানে আছে সেটি সমাধান করার। এটি একটি জাতীয় রায়। যদিও এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠান কিন্তু পুরো জাতি আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড, হল আইডি কার্ড, লাইব্রেরি কার্ড তিনটির যেকোনো একটি থাকলেই ভোট দিতে পারবে বলে জানান চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘অনেক ধরনের আইডি আছে, যেকোনো একটা আইডিতে তাকে শনাক্ত করা গেলে সে ভোট দিতে পারবে।’ মনোনয়ন ফিরে পেতে আপিলের শেষ দিন আবেদন করেছেন ৩৪ জন।