তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচনের দিকে সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা দেশের মানুষের কাছে একটা চমৎকার বার্তা দিতে চাই। আমরা গণতন্ত্রের স্থায়ী রূপের দিকে ও ম্যাচিউর পজিশনের দিকে যেতে চাই। সে জায়গায় আমরা বারবার প্রশাসনকে বলেছি একটা ফ্রি ফেয়ার ক্রেডিবল ইলেকশন আয়োজন করার জন্য।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা যারা এখানে প্রার্থী হয়েছি সবাই একেকজন জুলাই এর যোদ্ধা। জুলাইয়ে আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের পরিচয় ভুলে গিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা যদি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই, তাহলে যে জুলাই বিপ্লব ঢাবি থেকে শুরু হয়েছে সেই ঢাবিতে গণতন্ত্রের চমৎকার নজির স্থাপন করতে হবে। ডাকসু নির্বাচন শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা সেই নজির দেখিয়েছি। আজকের নির্বাচনে আমরা আশা করব, আমরা যারা প্রার্থী আছি, যত ছাত্র সংগঠন আছে সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করব।’
সাদিক কায়েম বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত অবজারভ করছি। আমরা আশা করবো সকালে যেভাবে নির্বাচন শুরু হয়েছে সেভাবে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।’
আচরণবিধি লঙ্ঘন প্রসঙ্গে সাদিক কায়েম বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করেছি। প্রশাসন বলেছিল এখানে কোনো ডেস্ক বসানো যাবে না। ১০০ গজের মধ্যে কোনো স্লিপ দেয়া যাবে না। কিন্তু আমরা সকালে এসে দেখতে পেয়েছি একটা ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন প্রার্থী ডেস্ক বসিয়েছে। স্লিপ বিতরণ করছে। প্রার্থীদের অনুরোধ করবো আপনারা দায়িত্বশীল আচরণ করুন। প্রশাসনকে বলবো যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’
আরও পড়ুন:
ডাকসু ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি থেকে গণতন্ত্রের একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হতে যাচ্ছে আজ। আপনারা কেউ ভোট না দিয়ে বাসায় বসে থাকবেন না। আপনারা সকলে আসুন। তাছাড়া ভোটাধিকার নিয়ে যদি বলি আমার ভোট উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। আমি এখনো ভেতরে প্রবেশ করিনি। পরবর্তী মন্তব্যে আমি জানাতে পারবো সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে। আমি আপনাদের মধ্যে দিয়ে পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের আহ্বান করছি, একটি দীর্ঘ সময় পর গণতন্ত্রের দ্বার উন্মোচন হতে যাচ্ছে। ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ হচ্ছে। তারা তাদের বিবেককে খাটিয়ে যথাযথ নেতৃত্বকে বেছে নিবেন।’
ভোট দিতে এসে জিএস পদ প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিম বলেন, ‘আমি শতভাগ আশাবাদী। আমার মনে হয় আজ ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হবেন। ভোটের পরিবেশ এখনো পর্যন্ত ভালো আছে আশা করি ভালো থাকবে সারাদিন। আমরা আশা রাখি একটি মডেল ডাকসু হবে। ছয় বছর আগে একটি প্রশ্নবিদ্ধ ডাকসু হয়েছিল তাই বলা যায় ৩৫ বছর পর একটি সুষ্ঠু, সুন্দর এবং মডেল ডাকসু হতে যাচ্ছে বলে আমাদের বিশ্বাস।’
উল্লেখ্য, আজ (মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। দীর্ঘ ৯ বছর পর আয়োজিত ডাকসু নির্বাচনে ২৮টি পদে লড়ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। এরমধ্যে নারী প্রার্থী রয়েছেন ৬২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ জন এবং নারী ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের পদগুলোতে মোট ৪৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে, হল সংসদের ১৮টি হল থেকে এক হাজার ৩৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। অর্থাৎ প্রতি ভোটার আজ মোট ৪১টি পদে ভোট দেবেন।
ক্যাম্পাসের নির্ধারিত ৮টি কেন্দ্রে মোট ৮১০টি বুথে ভোট দেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভোটাররা ডাকসুর ২৮টি পদ এবং প্রতিটি হল সংসদের ১৩টি পদে ভোট দেবেন।