জাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে, আরও যা জানা গেলো

ভোট গ্রহণ চলছে
ক্যাম্পাস
শিক্ষা
0

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে আজ (বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ভোটের প্রথম দিকে আবহাওয়া ভালো থাকলেও সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি নামে। এতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা এবং হলের বাইরে থেকে আসা ভোটাররা পড়েছেন ভোগান্তিতে। পাশাপাশি নির্বাচনে কিছু প্রযুক্তিগত ও প্রশাসনিক ত্রুটির অভিযোগও উঠেছে।

ভোটকেন্দ্রের পরিস্থিতি

ইতিহাস বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাসির জানান, ৩৩ বছর পর জাকসুর নির্বাচন হচ্ছে। এটা অত্যন্ত আনন্দের। তবে বৃষ্টি কিছু সময়ের জন্য সামান্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ভোট দিতে আসবেন।

নির্বাচনে মোট ২১টি হল কেন্দ্রে ২২৪টি বুথে ভোট গ্রহণ চলছে। জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৭৪৩ জন, যার মধ্যে ছাত্রী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন এবং ছাত্র ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন। এ নির্বাচনে ২৫টি পদে মোট ১৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ব্যালটে ভুলের অভিযোগ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ব্যালট পেপারে কার্যকরী সদস্য পদে তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেয়ার কথা থাকলেও নির্দেশনায় কেবল একজন প্রার্থীর পাশে টিকচিহ্ন দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী সাদমান বলেন, ‘ভোট দেয়ার সময় আমাদের বিষয়টি নজরে এসেছে। এ ধরনের ভুলের বিষয়ে প্রশাসনের সাবধান হওয়া উচিত ছিল।’

হলের পোলিং কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার মন্ডল জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। শিক্ষার্থীদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হয়েছে, তারা তিনটি প্রার্থীকেই ভোট দিচ্ছেন।

জাকসু নির্বাচনে আঙুলে কালি না দেয়ার অভিযোগ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল কেন্দ্রে ভোটারের আঙুলে মার্কার দিয়ে দাগ না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী আল আমিন বলেন, ‘আমাদের হলে ভোট দেয়ার সময় কোনো ভোটারের আঙুলে মার্কার দিয়ে দাগ দেয়া হচ্ছে না। শুধু স্বাক্ষর নিয়ে ব্যালট দেয়া হচ্ছে।’

পোলিং কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে আমাদের কাছে কোনো মার্কার সরবরাহ করা হয়নি। তবে সাবেক শেখ রাসেল হল কেন্দ্রে (২১ নম্বর) হাতে মার্কারের দাগ দিয়ে ভোট গ্রহণ চলছে। এখানে মোট ভোটার ৭৩৫ জন, বেলা ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৯২টি।’

আরও পড়ুন:

জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলম জানান, সব হলেই ভোট দেয়ার পরে আঙুলে কালি দেয়ার নির্দেশ রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে অমোচনীয় কালি দেয়ার জন্য দুটি করে কলম দেয়া হয়েছে। ওই হলে কেন দেয়া হচ্ছে না, তা খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আটক

ভোট গ্রহণ চলাকালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের একটি কক্ষ থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান সোহানকে আটক করা হয়।

সোহান জানান, আমি রাতের জন্য ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। শরীর খারাপ লাগায় এখানে এসে শুয়ে পড়েছি। তবে কোনো অনুমতি গ্রহণ করেননি। আটক হওয়া সোহানকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন চলাকালে সাবেক শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে অবস্থান করা আচরণবিধি লঙ্ঘন। তাই তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।’

প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ইএ