চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে আবারও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যু হার হু হু করে বাড়তে থাকে। এরপর তড়িঘড়ি করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ব্রুটোসূচক নির্ণয়ে জরিপ করে। জরিপে ঢাকার দুই সিটির ৩ হাজার ১৪৭টি বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ৪৬৩টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভার সন্ধান পায় আইইডিসিআরের মাঠ কর্মীরা। এ হিসেবে সংস্থাটি জানায়, রাজধানীর ১৪ দশমিক ৭১ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার অস্তিত্ব রয়েছে।
মহাখালীর ডেঙ্গু ডেডিকেটেড-১৯ এ হাসপাতালটিতে সকালে ভর্তি রোগী ছিল ৪৯ জন, ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫৬ জনে। রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় সেবা প্রদানে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও নার্সদের।
রোগীরা জানান, মশা নিধনে পাড়া মহল্লাতে তেমন কোন কর্মসূচি চোখে পড়ে না। আগে মশা নিধন স্প্রে করা হতো। এখন আর স্প্রে করা হয় না।
ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও গণসচেতনতা সৃষ্টি না হলে ডেঙ্গুর লাগাম টানা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন:
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীন বলেন, ‘পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকলে সেখানে কীটনাশকে কাজ হবে না। বাড়ির বাহিরে আমরা স্প্রে করছি, কিন্ত মশা উৎপন্ন হচ্ছে বাড়ির ভেতরে। এ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।’
এদিকে মহাখালীর ডিএনসিসির ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালের পরিচালক জানান, এডিস মশা তার চরিত্র বদলেছে, এখন সকাল সন্ধ্যা রাতে সমানতালে কামড়াতে থাকে এডিস।
ডিএনসিসি ডেডিকেটেড-১৯ হাসপাতাল পরিচালক ডা. কর্নেল তানভীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ৪০-৫০ জন ডেঙ্গু রোগী পাচ্ছি। ঢাকা শহরে দেখা যায় এখানে একটি বাড়ির সঙ্গে আরেকটি বাড়ি লেগে যায়। প্রায়ই দেখা যায় একেক জায়গায় কাজ চলছে। কন্সট্রাকশন সাইটে পানি জমে থাকে এগুলো সরানো হয় না, এখানে মশা জন্মাতে পারে।’
একাধিক হাসপাতালে চাপ সামাল দিতে বাড়তি ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ওয়ার্ড, লজিস্টিক সাপোর্ট রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৮ হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ১১৪ জনের।