প্রবাসীদের একজন বলেন, ‘এখান আসার পর কোম্পানিতে বেশ কিছুদিন কাজ করি। কিন্তু কিছুদিন পর থেকে তারা আর বেতন দিতে চাই না। যার ফলে কোম্পানি থেকে পালাতে বাধ্য হই। অবশেষে অবৈধ হই।’
স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়া; গেলেই মিলবে কাজ, ঘুচবে অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, হবে স্বপ্নপূরণ। এমন স্বপ্নে প্রবাসে এসে অনেকেই সম্মুখীন হচ্ছেন ভিন্ন বাস্তবতার। মালয়েশিয়ায় গিয়ে বহু প্রবাসী এখনও আছেন নানা সংকটে।
ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি কাওয়াগুচিতে বকেয়া বেতন আদায়ে আন্দোলনে নামে দুই শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি। পরে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের মধ্যস্থতায় কোম্পানিটি বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বেতন বাবদ বকেয়া প্রায় ৭ কোটি টাকা।
কাওয়গুচি কোম্পানির একজন বলেন, ‘দেশ থেকে লোন নিয়ে এখানে আসি। কিন্তু কোম্পানি বেতন না দেয়ায় আমরা এখনো এই লোন পরিশোধ করতে পারি নাই। আমরা এখন বেতন চাই।’
অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশিদের অভিবাসন ব্যয় অনেক বেশি। এতে মালয়শিয়ার আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বিদেশে কর্মী পাঠানোর পদ্ধতির সংস্কারে পরামর্শ এই বিশেষজ্ঞের।
অভিবাসী শ্রমিক অধিকার বিশেষজ্ঞ অ্যান্ডি হল বলেন, ‘বিশ্বের যেকোনো জায়গায় বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়োগ খরচ সবচেয়ে বেশি। এই ব্যবস্থাটি পদ্ধতিগতভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অকার্যকর। তাই বাংলাদেশের সরকারকে তাদের অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে হবে। একটি টেকসই অভিবাসন নীতি তৈরি করতে হবে, যেখানে কর্মীদের বিদেশে পাঠানোর জন্য নিয়োগকর্তার মাধ্যমে বেতনের মডেল তৈরি করতে হবে। যেখানে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হবে না।’
জোরপূর্বক শ্রম একটি বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। বিশ্ব বাণিজ্যে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে মালয়েশিয়া। দেশটিতে বিপুল সংখ্যক বিদেশি কর্মী কর্মরত আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নজরদারি ব্যবস্থা কঠোর না হলে শ্রমিক শোষণের শঙ্কা তৈরি হবে।