চিকিৎসা সেবায় অনেকদূর এগিয়ে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রতিনিয়ত বাড়ছে হাসপাতাল, বাড়ছে এই খাতে কর্মসংস্থান। তবে দেশটির চিকিৎসা সেবা খাতে বাংলাদেশি ডাক্তার ও সংশ্লিষ্ট পেশায় কর্মীর সংখ্যা হাতেগোনা।
আবুধাবি, দুবাই, আজমান, শারজাহ ও রাস আল খাইমাহর মতো শহরগুলোয় ভাষা জটিলতায় দেশীয় চিকিৎসকেরাই প্রবাসীদের প্রধান ভরসা। তবে, বাংলাদেশি চিকিৎসকের সংখ্যা খুব কম থাকায় প্রত্যাশিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রবাসীরা।
আবুধাবির আল কামাল মেডিকেল পলিক্লিনিকের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফাতেমা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা রেফার করি বাঙালি ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য। কারণ ওরা আমাদের ভালো করে বুঝিয়ে বলে। সমস্যার বিষয়ে ভালো করে বুঝিয়ে বলতে পারে।’
আবুধাবির জেনারেল প্র্যাকটিশনার ডা. রিফাত আরা ফেরদৌস বলেন, ‘যারা স্পেশালিস্ট আছে, যারা এমডি করে বা এমএস করে এখানে আসতে পারে ওই পাথেয়টা আরো বেশি সহজ ও স্ট্যাবল।’
আবুধাবির আল কামাল মেডিকেল পলিক্লিনিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রুকসানা আক্তার বলেন, ‘জেনারেল প্র্যাকটিশনারদের অনেক সুযোগ আছে। তবে প্রথমত তাদের বাংলাদেশ থেকে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে। তারপর দুই বছরের অভিজ্ঞতা লাগবে।’
চিকিৎসকের পাশাপাশি নার্স, ফার্মাসিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, অকুপেশনাল থেরাপিস্ট, মেডিক্যাল ল্যাব টেকনিশিয়ান, বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পেশায় দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে।
সম্প্রতি ১৫ বছরের বেশি সময় নার্সিং পেশায় কর্মরতদের গোল্ডেন ভিসা প্রদানের ঘোষণা করেছে দুবাই। সাধারণ শ্রমিকের পাশাপাশি দেশ থেকে চিকিৎসা খাতে কর্মী পাঠানোর জন্য সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান প্রবাসীদের।
আবুধাবির মেডিক্লিনিক মিডল ইস্টের পেশেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ইয়াছিন আরাফাত সোহাগ বলেন, ‘বাংলাদেশি আরো নার্স বা ডাক্তার আমরা নিয়ে আসতে পারতাম। বাংলাদেশি কমিউনিটির যদি একটা হাসপাতাল থাকে তাহলে যারা বাংলাদেশি আছে বা শ্রমিক শ্রেণির লোকজন আছে তাদের জন্য সুবিধাজনক হতো।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অভিবাসন কনসালটেন্ট মীর কামাল বলেন, ‘নার্সের ক্ষেত্রে যদি ট্রেইনডআপ, রেজিস্টার্ড নার্স এখানে আসে তাহলে তাদের কর্মসংস্থান আছে, তাদের বেতনও ভালো, তাদের নিরাপত্তাও আছে। তাদের কোনোরকম প্রতারণার সুযোগ নেই।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলছেন, আমিরাতে নার্স ও ল্যাব টেকনিশিয়ান পেশায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই চিকিৎসা সেবা খাতে দক্ষ কর্মী তৈরির বিষয়ে আলোচনা করছে দুই দেশ।
আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশে ট্রেনিং সেন্টার তৈরির জন্য আমরা তাদের অনুরোধ করেছি। আমরা বলেছি তাদের অবকাঠামোগত সুবিধা দেব। এরা তাদের কারিকুলাম, প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসবে।’
প্রতিযোগিতামূলক বাজার ধরার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত কর্মীর বিকল্প নেই। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান প্রবাসীদের।