ফেনীর জাহিদ হোসেন কাজের তাগিদে প্রায় ২৫ বছর ধরে বসবাস করছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল আইন প্রদেশে। বিদেশের মাটিতে পাসপোর্ট নবায়ন ও কনস্যুলার সেবা নিতে যেতে হতো আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাসে। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেবা পেতে, কর্মস্থল থেকে নিতে হতো একদিনের ছুটি, যাতায়াতে খরচ হতো অর্থও।
জাহিদের মতো প্রবাসীদের কথা চিন্তা করে দূর-দূরান্তের প্রদেশগুলোতে কনস্যুলার আউটরিচ ক্যাম্প পরিচালনা করছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট। সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে হাতের নাগালে সেবা পেয়ে ভোগান্তি কমছে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় বাংলাদেশ সমিতিতে পরিচালিত হচ্ছে এসব ক্যাম্প।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আগে আবুধাবি যেতে হলে একজনকে কমপক্ষে ২০০ টাকা খরচ করতে হত, এক দিনের কাজ মিস করতে হত, যেটা এখন হচ্ছে না।’
দূতাবাসের তত্বাবধানে সপ্তাহের প্রত্যেক শনিবার আল আইন ও প্রতি ১৫ দিন পর শুক্রবার মোহাম্মদ বিন জায়েদে এই সেবা দেয়া হয়।
বাংলাদেশ কনস্যুলেটের মাধ্যমে শারজাহ, আজমান, উম্ম আল কোয়েন, দিব্বা, হাত্তা ও ফুজাইরাহ অঞ্চলে শুক্র, শনি ও রোববার পর্যায়ক্রমে চলে কার্যক্রম। স্থানভেদে একেকটি ভেন্যুতে গড়ে ২০০ থেকে ৬০০ জনকে সেবা নিশ্চিত করে কনস্যুলার আউটরিচ ক্যাম্প।
আল আইন আউটরিচ কনস্যুলার সার্ভিসের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জাহেদুল আলম বলেন, ‘দূতাবাসের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এখানে ওরা প্রতি শনিবারে দিচ্ছে। এ ছাড়া শনিবার ছাড়া, আমাদের এখানে অন্যান্য দিনগুলোতে সেবা নিতে পারবেন।’
আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান শাহানাজ আক্তার রানু বলেন, ‘বাংলাদেশ দূতাবাস সপ্তাহের ৫ দিনের বাহিরেও প্রত্যেক শনিবার আমরা আলাইনে আউটরিচ প্রোগ্রাম করছি এবং প্রতি ১৫ দিনে একবার শুক্রবারে আমরা মদিনায় আউটরিচ প্রোগ্রাম করছি।’
সেবা প্রার্থীদের অধিকাংশই পাসপোর্ট নবায়ন, নতুন পাসপোর্টের আবেদন, ই-পাসপোর্টের জন্য বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে এসব ক্যাম্পে যান। এ ছাড়া ট্রাভেল পারমিট ও প্রবাসী কল্যাণ কার্ড সেবাও উল্লেখযোগ্য।
মিশনের তথ্য বলছে, গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দেশটিতে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৪৩টি ই-পাসপোর্ট ও ৩৭ হাজারের বেশি এমআরপি পাসপোর্ট পেয়েছেন বাংলাদেশিরা।
প্রবাসীরা বলছেন, দূতাবাস ও কনস্যুলেটের বাইরে মিশনের তত্বাবধানে পরিচালিত এসব আউটরিচ ক্যাম্পের কারণে কনস্যুলার সেবা প্রবাসীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে।
তবে সহায়ক ভূমিকায় থাকা বাংলাদেশ সমিতি ও সংগঠনগুলোকে স্থানীয় প্রবাসীরা সহযোগিতা করলে সেবামান আরও বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।