সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পেলো বিজ্ঞানীরা

ব্ল্যাক হোল
তথ্য-প্রযুক্তি
0

মহাবিশ্ব যেমন বিশাল, তেমনই রহস্যময়। আমাদের রাতের আকাশে জ্বলজ্বলে তারাদের দিকে আমরা মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকাই, কিন্তু তারাদের গভীরে কী লুকিয়ে আছে, তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। সেই কৌতূহলের নিরসনেই বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন। ‘ব্ল্যাক হোল স্টার’ নামে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পেয়েছেন তারা।

সম্প্রতি ‘সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনমি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন বিশ্লেষণ অনুসারে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ‘দ্য ক্লিফ’ নামে পরিচিত একটি ক্ষুদ্র লাল বিন্দুর ওপর গবেষণা চালানোর সময় অভূতপূর্ব বস্তুটি শনাক্ত করেছেন। তাদের ধারণা, এটি একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল। যা বিশাল, ঘন গ্যাসের মেঘের মধ্যে আবৃত রয়েছে। এ নতুন ধরনের মহাজাগতিক বস্তুকে তারা নাম দিয়েছেন ‘ব্ল্যাক হোল স্টার’।

সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এমন কিছু বিশাল নক্ষত্রের সন্ধান পেয়েছেন, যাদের কেন্দ্রে পরমাণু ফিউশনের বদলে লুকিয়ে আছে একটি সক্রিয় ব্ল্যাক হোল। সাধারণ নক্ষত্ররা তাদের কেন্দ্রে হাইড্রোজেনকে হিলিয়ামে রূপান্তর করে শক্তি উৎপাদন করে, কিন্তু এ ‘ব্ল্যাক হোল স্টার’ এর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন।

আরও পড়ুন:

এ বিশেষ তারার ভেতরে থাকা ব্ল্যাক হোলটি তার চারপাশের গ্যাসকে দ্রুত গ্রাস করতে থাকে, যা একটি উজ্জ্বল অ্যাক্রিশন ডিস্ক তৈরি করে। এ প্রক্রিয়ায় প্রচণ্ড শক্তি নির্গত হয়, যা নক্ষত্রের চারপাশের হাইড্রোজেন গ্যাসের বিশাল, উত্তপ্ত এবং ঘন আবরণকে আলোকিত করে রাখে। বাইরে থেকে দেখলে এ বস্তুটি একটি অতি-উজ্জ্বল, লালচে-ধূসর বিশাল নক্ষত্রের মতোই দেখায়।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করে দেখেন, তাদের আলোর উৎস সাধারণ নক্ষত্রের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। এ অপ্রত্যাশিত ফলাফলই বিজ্ঞানীদেরকে নতুন ‘ব্ল্যাক হোল স্টার’ মডেলটি তৈরি করতে উৎসাহিত করেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ আবিষ্কার মহাবিশ্বের প্রাথমিক সময়ে কীভাবে সুপারম্যাসিভ বা অতি বিশাল ব্ল্যাক হোলগুলো এত দ্রুত সৃষ্টি হয়েছিল, সেই পুরনো রহস্যের জট খুলতে সাহায্য করতে পারে। তারা মনে করেন, এ ধরনের ব্ল্যাক হোল তারারাই প্রাথমিক সময়ে মহাবিশ্বের দ্রুত ভর অর্জনের এক নতুন পথ হতে পারে।

এ নতুন ধারণা আমাদের মহাজাগতিক পরিবেশ সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাকে বদলে দিতে পারে এবং নক্ষত্র ও ব্ল্যাক হোলের বিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে এক নতুন দিকনির্দেশনা দেবে। মহাকাশের আরও গভীরে চোখ রেখে বিজ্ঞানীরা এখন নিশ্চিত হতে চান, ঠিক কত সংখ্যক এমন ব্ল্যাক হোল স্টার মহাবিশ্বে লুকিয়ে আছে।

এফএস