ইসরাইল–হামাস, ইউক্রেন–রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়ে আবারও শুল্কযুদ্ধে মন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সুলভ মূল্যের ধাতুতে সয়লাব হওয়া থেকে দেশের বাজারকে রক্ষা করতে চান তিনি। ইস্পাত শিল্পকে রক্ষার যুক্তি দিয়ে ইস্পাত আর অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্কারোপ ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করলেন ট্রাম্প। যা কার্যকর হয়েছে আজ (বুধবার) থেকেই।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘ইস্পাত আর অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। আজ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখন থেকে ২৫ শতাংশ নয় ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ হচ্ছে এই দুই আমদানি পণ্যে। পেনসিলভানিয়াতে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সব বাণিজ্যিক অংশীদার দেশকে বার্তা দেয়া হয়েছে, তাদের প্রস্তাব নিয়ে আসতে। প্রেসিডেন্ট চুক্তি করতে চান।’
হোয়াইট হাউজ বলছে, দেশের বাইরে থেকে কমদামী ইস্পাত আর অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি থামাতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, এই উদ্যোগ দেশের ইস্পাত শিল্পকে সুরক্ষা দেবে। কিন্তু আপাতত এই উচ্চ-শুল্কের আওতামুক্ত যুক্তরাজ্য।
শুল্কারোপের আওতায় পড়ছে কানাডা, মেক্সিকো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বুধবার থেকে মার্কিন সব প্রতিষ্ঠানকে ৫০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করেই দেশের বাইরে থেকে ইস্পাত আমদানি করতে হবে। যেখানে ব্রিটেন থেকে আমদানি করলে সেই শুল্ক ২৫ শতাংশই থাকছে।
যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশের বাজারে বেড়ে গেছে ইস্পাতের দাম। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইস্পাত আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র।
দেশের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধাতুই কানাডা, ব্রাজিল, মেক্সিকো আর দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করে দেশটি। প্রথম মেয়াদে ইস্পাতে ২৫ আর অ্যালুমিনিয়ামে ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রত্যাশা, বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলো এই শুল্কযুদ্ধ এড়িয়ে যেতে তার কাছে নিয়ে আসবেন ভালো কোন প্রস্তাব।
মেক্সিকো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই ইস্যুতে আলোচনা করা হবে। ব্রিটেনের মতো মেক্সিকোকেও শুল্কারোপের বাইরে রাখতে বলা হবে। কারণ এই সিদ্ধান্ত অনৈতিক। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন মেক্সিকোর অর্থ সচিব মারকেলো এব্রার্দ। কানাডা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি চলছে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শুল্কযুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই নিজের পায়ে কুড়াল মারছেন।