‘কোনোভাবেই ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারবে না’

ইরানের পরমাণু প্রকল্প!
বিদেশে এখন
0

বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচলে আজ (শনিবার, ১৯ এপ্রিল) দ্বিতীয়বারের মতো আলোচনার টেবিলে বসছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল। কোনোভাবেই ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারবে না বলে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ওয়াশিংটন বাস্তবসম্মত দাবি করলে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চু্ক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব। আলোচনায় মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া।

ওমানের মাস্কাট থেকে ইতালির রোম। সময় ও স্থান পরিবর্তন হলেও মুখগুলো এক। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকের টেবিলে যুক্তরাষ্ট্র- ইরান। যার আলোচ্য বিষয় তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি। স্টিভ উইটকফ ও আব্বাস আরাঘচির এই বৈঠকে এবারও মধ্যস্থতা করবেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইরান কোনোভাবেই পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না। দ্বিতীয় দফা বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে তেহরানের পরমাণু ইস্যুতে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে এবারও ট্রাম্পের দাবি, ইরানকে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সহজ কথায় আমি ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা থেকে আটকাতে চাচ্ছি। তাদের হাতে পরমাণু অস্ত্র দেয়া যাবে না। আমি একটি সমৃদ্ধশালী ইরানকে দেখতে চাই। তাদের হাতে পরমাণু অস্ত্র এলে আপনারা সবাই অখুশি হবেন। কারণ এতে সবার জীবনই সঙ্কটের মুখে পড়বে।’

বৈঠকের আগে রাশিয়া সফরে কথা বলেছেন আব্বাস আরঘচি। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, ওয়াশিংটন বাস্তবসম্মত দাবি করলে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চু্ক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব। যদিও মার্কিনদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। অন্যদিকে ওয়াশিংটন-তেহরান আলোচনায় মধ্যস্থতার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ‘আমরা সাহায্যের পাশাপাশি মধ্যস্থতা করতে রাজি আছি, যা ইরানের দৃষ্টিকোণ থেকে সহায়ক ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হবে। চুক্তিতে পৌঁছানোর একমাত্র উপায় পরমাণু ইস্যুতে ঐকমত্যে আসা।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ‘অন্যান্য প্রসঙ্গ না টেনে শুধু পরমাণু কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করলে বৈঠকটি গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যদি অবাস্তব দাবি তুলে না ধরে, সেক্ষেত্রে আমার মতে বৈঠকটি সফল হবে।’

তেহরানের সূত্রের বরাতে টাইমস অফ ইসরাইলের প্রতিবেদন বলছে, প্রথম দফা বৈঠকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা নির্দিষ্ট করতে সম্মতি দিয়েছে ইরান। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আবারও চুক্তি থেকে বের হবে না বলে নিশ্চিত করতে হবে। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সেন্ট্রিফিউগ ধ্বংসের দাবি মানা হবে না বলে সাফ জানিয়েছে দেশটির প্রতিনিধিদল।

প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, ১০ বছর আগের চুক্তির মতো এবারও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৬০ শতাংশে বেধে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। যা মেনে নিয়ে সবাইকে চমকে দেন মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ।

যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি সত্ত্বেও ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা এখনো বাদ দেয়নি ইসরাইল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন ইসরাইলের ৩ শীর্ষ কর্মকর্তা। তাদের দাবি তেহরান পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করা নাহলে ওয়াশিংটনের সাহায্য ছাড়াই সীমিত হামলা চালাতে পারে তেল আবিব।

সেজু