লন্ডনে অসুস্থ কবুতরের ভরসা জেনি ও জেকব

কবুতরের সঙ্গে নিবিড় বন্ধুত্ব
বিদেশে এখন
0

কবুতরের সঙ্গে নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন লন্ডনের জেনি ব্রেনান ও জেকব পিটার। লন্ডনের রাস্তায় হাজারও কবুতরের রক্ষাকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারা। কোন কবুতর অসুস্থ হলে তাদের কাছেই খুঁজে নিচ্ছে আশ্রয়।

বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় শহরগুলোর একটি যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন। শহরটির পুরানো ও অভিজাত সব স্থাপনা যেমন নজর কাড়ে, তেমনি মুগ্ধ করে চোখ ধাঁধানো সব আধুনিকতা। নান্দনিক স্থাপনার পাশাপাশি লন্ডনের প্রতিটি শহরের পথঘাটে দেখা মিলবে অসংখ্য কবুতরের।

অলি গলি পার্কে অবাধ বিচরণ করা এসব কবুতরের মাঝেই শান্তির খুঁজেছেন জেনি ব্রেনান এবং জেকব পিটার। নিয়মিত শহরের বিপদগ্রস্ত কবুতর উদ্ধার ও চিকিৎসায় নিঃশব্দে, নিবেদিতভাবে কাজ করছেন তারা।

জেনি জানান, লন্ডনের কবুতরদের গুরুতর সমস্যা হলো স্ট্রিংফুট। রাস্তাঘাটের আবর্জনা-যেমন সুতা, ফিশিং লাইনের টুকরো, মানুষের চুল পায়ে জড়িয়ে পা কেটে যায় কবুতরের। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে আঙুল, এমনকি পুরো পা ক্ষতিগ্রস্ত হয় কবুতরের।

তিনি বলেন, ‘আমি খুব সংবেদনশীল। কবুতরগুলোর কষ্ট আমার কাছে বেশ কঠিন এবং হতাশাজনক মনে হয়। আমি তাদের পায়ের আঙুল বাঁচানো ও গতিশীলতা পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি কষ্ট লাঘব করার চেষ্টা করছি। অনেক বস্তু পায়রার পায়ের চারপাশে জড়িয়ে যায় এবং জট পাকিয়ে যায়। এটি ঠিকভাবে অপসারণ না করলে, কবুতরের ত্বক নষ্টের পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে আঙ্গুলটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’

উদ্ধার অভিযানে জেনি ও পিটার খাবারের বীজ ছিটিয়ে কাছে টানেন কবুতরগুলোকে, তারপর একটি তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে ঢেকে ফেলেন। এরপর কাঁচি বা প্লায়ার্স ব্যবহার করে পায়ে লেগে থাকা বস্তু সরিয়ে দেন।

পোষাপাখির মতো রাস্তার এসব পাখির যত্নে সবাইকে সচেতন ও সহানুভূতিশীল হওয়ার তাগিদ তাদের।

জেনি জানান, এটি একটি মানবসৃষ্ট সমস্যা। তাই আমার মনে হয় যে কারও দায়িত্ব নেওয়া উচিত, যতটা সম্ভব এই সমস্যাটি সমাধান করার চেষ্টা করা উচিত। কবুতর খুব, খুব মিষ্টি এবং বুদ্ধিমান পাখি। এখানকার স্থানীয় কবুতরের দল আমাকে চিনতে পারে। তাই যদি আমি ট্রেনে উঠতে স্টেশনে যাই তারা আমার কাছে খাবারের জন্য ছুটে আসবে। বিষয়টি আমি সত্যিই উপভোগ করি।

করোনা মহামারির সময় পাখিকূলের যত্নে নিজ উদ্যোগেই এগিয়ে আসেন জেনি ও পিটার। এরপর সময়মতো পাখিদের খাবার দেয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোথাও কোন অসুস্থ কবুতরের খোঁজ মিললেও দ্রুত ছুটে যান জেনি ও পিটার। পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন লন্ডন শহরের কবুতরদের সহায়তায় বের হন তারা।

সেজু