ইউরোপে ১০ দিনের দাবদাহে প্রাণহানি ছাড়ালো ২ হাজার

পরিদর্শনকারীদের মধ্যে পানির বোতল বিতরণ করছেন এক স্বেচ্ছাসেবক
বিদেশে এখন
0

১০ দিনের দাবদাহে ইউরোপের ১২টি শহরে গরমে অসুস্থ হয়ে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩শ'তে। এরইমধ্যে দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বে এই মুহূর্তে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে থাকা মহাদেশ ইউরোপ।

দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত দিনটিতে সমুদ্র সৈকত আর উন্মুক্ত উদ্যানে উষ্ণতা উপভোগে ব্যস্ত সাধারণ মানুষ। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে তাপমাত্রার পারদ ২৯ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকলেও এতে বেশ আরামই মিলছে বাসিন্দাদের।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘চমৎকার লাগছে। মনে হচ্ছে বাড়ি ফিরেছি। তবে এমন আবহাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। শীতের কাপড় নিয়ে এখানে বেড়াতে এসে এখন গরমে পরার পোশাক কিনতে হলো।’

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতেও তীব্র গরমে পুকুর, রাস্তার পাশে ঝর্ণা যে যা পাচ্ছেন, শীতের পরশ পেতে সেখানেই ছুটছেন বাসিন্দারা। যদিও বছরের বড় একটি সময় হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা থাকে বলে রুশরাও উপভোগ করছেন গ্রীষ্মের এই খরতাপ।

তারা বলেন, ‘শহরের ভেতরে থেকে এমন গরমে নিজেকে সুস্থ রাখা আসলেই কঠিন। তবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ, ঝর্ণা, খোলা মাঠে সুবিধাই হচ্ছে।’

স্কটল্যান্ড-রাশিয়ায় এ আবহাওয়া স্বস্তির হলেও সম্প্রতি তীব্র দাবদাহের শিকার ইউরোপের অন্যান্য দেশের মানুষের জন্য বাস্তবতা ভিন্ন। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন ও লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের চলতি সপ্তাহের জরিপ বলছে, ২ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিনের দাবদাহে ইউরোপের ১২টি শহরে গরমে অসুস্থ হয়ে প্রাণ গেছে ২৩শ' মানুষের। এরমধ্যে দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পৃক্ত বলেও জরিপে উল্লেখ করা হয়।

বার্সেলোনা, মাদ্রিদ, লন্ডন ও মিলানসহ ১২টি শহরে চালানো হয় এ জরিপ। গবেষকরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এসব শহরে দাবদাহকালীন গড় তাপমাত্রার চেয়েও উত্তাপ বাড়ছে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেশি। ২০২৩ ও ২৪ সালের পর চলতি বছরের জুন মাস ছিল ইউরোপের ইতিহাসে তৃতীয় উষ্ণতম জুন। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বলছে, মানবসৃষ্ট কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বিশ্বের তৃতীয় জনবহুল মহাদেশটি।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার জনসংযোগ কর্মকর্তা ক্লারা নুলিস বলেন, ‘মানুষের কারণে পরিবেশে গ্রিনহাউজ গ্যাস বাড়ছে। এটাই এ সমস্যার মূল কারণ। পরিবেশে তাপ আটকে ফেলে গ্রিনহাউজ গ্যাস। কার্বন-ডাই-অক্সাইড এই তাপ আটকাতে সাহায্য করে। আর এ কারণেই তাপমাত্রা দিন দিন এতো বাড়ছে।’

ইএ