সিরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী অস্ত্র বিরতির ঘোষণা দিলেও দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্য ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। তারা অভিযোগ তোলে, অস্ত্র বিরতির শর্ত অমান্য করেছে সিরীয় বাহিনী। এ উছিলায় দ্রুজ গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর দাবি করে সিরীয় যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে ইসরাইল। যা থেকে বেদুইন দ্রুজ বাহিনীর সহিংসতা রূপ নেয় সিরিয়া-ইসরাইল সংঘাতে। সুয়েইদা শহর ছাড়াও বুধবার (১৬ জুলাই) থেকে দেশটির রাজধানীতেও প্রাণঘাতী বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। এতে ইসরাইল-সিরিয়া সংঘাত উত্তেজনা এখন তুঙ্গে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘কাপুরুষোচিত কাজটি ইসরাইলি নীতির অংশ। নেতানিয়াহু নিজে সমস্যা থেকে বাঁচতে আবারও অঞ্চলটিকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করছেন।’
এখন বিশ্ববাসীর মনে প্রশ্ন হলো, কারা এই দ্রুজ সম্প্রদায়? কেনইবা তাদের জন্য সিরিয়ায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল? আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, দ্রুজরা একটি আরব ধর্মীয় গোষ্ঠী। পৃথিবীতে তাঁদের মোট সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। এই সম্প্রদায়ের মানুষ মূলত সিরিয়া, লেবানন ও ইসরাইলের পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করেন।
দ্রুজদের হয়ে সিরীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে ইসরাইলের কি লাইভ? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, ইসরাইলে এক লাখ ৩০ হাজার দ্রুজ নাগরিক বসবাস করে। এমনকি ১৯৫৭ সাল থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী দ্রুজ পুরুষদের ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেয়া হয়। আর এ কারণেই সিরিয়ায় বসবাসকারী দ্রুজদের রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে ঘোষণাও দিয়েছেন বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। অন্যদিকে দ্রুজরাও সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার অধীনে না যেয়ে নিজেদের স্বায়ত্তশাসন টিকিয়ে রাখতে মরিয়া। এতে পূর্ণ সায়ও দিচ্ছে ইসরাইল।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘দ্রুজরা আমার ভাই। আর এ জন্যই দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ার দ্রুজ নাগরিকদের রক্ষায় আইডিএফ, বিমান বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীও কাজ করছে। আমরা আমাদের দ্রুজ ভাইদের বাঁচাতে এবং শাসকগোষ্ঠীর দলগুলোকে নির্মূলে কাজ করছি।’
এমন পরিস্থিতিতে দ্রুজদের প্রতি সমর্থন জানাতে গিয়ে সিরিয়ায় ইসরাইলি আক্রমণে বড় ধরণের সংঘাতের শঙ্কা যেমন বাড়ছে, তেমনি মধ্যপ্রাচ্যে ভবিষ্যতের সামরিক ও কূটনৈতিক সমীকরণও প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।