একদিকে পূর্ব সীমান্তে ইউক্রেনীয় সেনাদের হটিয়ে একের পর এক গ্রাম দখল, অন্যদিকে রাজধানী কিয়েভে সেনাবাহিনীর বিমানঘাঁটি, শিল্প অবকাঠামোতে হামলা ইউক্রেনকে কোণঠাসা করতে ওঠে পড়ে লেগেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা বিভাগ স্বীকার করেছে, বৃহস্পতিবার কিয়েভে যে হামলা চালানো হয়েছে তা চলমান যুদ্ধের অন্যতম প্রাণঘাতী অভিযান। বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি ও আহত শিশুর পরিসংখ্যানের হিসেবে কিয়েভে এখনও পর্যন্ত এত বড় হামলা করেনি রাশিয়া। হামলার কবলে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারে ১২ শ’ পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করছে ইউক্রনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে, ১৬ মাস ধরে যুদ্ধের পর পূর্ব ইউক্রেনের চাসিভ ইয়ার শহরের দখল নিয়েছে রুশ সেনারা। যদিও তা মানতে নারাজ কিয়েভ। এছাড়াও পূর্ব সীমান্তের দোনেৎস্ক অঞ্চলে কিয়েভ সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে পুতিন বাহিনী। শুধু বৃহস্পতিবারই ১৯৩ দফা সংঘাতে জড়িয়েছে দুই পক্ষ। রুশ গণমাধ্যম আরটি বলছে, যে মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়াকে চাপ ও নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক তখনই ইউক্রেনে অভিযানের তীব্রতা বাড়িয়ে একের পর এক অঞ্চল দখলের নির্দেশ আসছে মস্কো থেকে।
এদিকে, হেলসিঙ্কি অ্যাকর্ডস কনফারেন্সের ভাষণে যুদ্ধ পরিস্থিতি ও ইউক্রেনের অবস্থা নিয়ে কথা বলছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বলেন, ইউক্রেনকে রক্ষার প্রশ্নে এখন রাশিয়ার পুতিন শাসনের অবসান প্রয়োজন। এ জন্য কিয়েভের পশ্চিমা মিত্রদের সহায়তা চেয়েছেন জেলেনস্কি। পাশাপাশি, ভিডিও বার্তায় রাজধানীবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, আহতদের উদ্ধার অভিযান আরও জোরদার করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘প্রিয় ইউক্রেনবাসী আহতদের উদ্ধারের অভিযান শুরু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সবাইকে উদ্ধার করা না হবে অভিযান চলবে। শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছেন।’
এদিকে, সংঘাত বন্ধে মধ্যপ্রাচ্য সফরের পর ইউক্রেনে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের। এরআগে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি সমঝোতায় আসতে রুশ প্রেসিডেন্টকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি চুক্তি না করলে মস্কোর ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।