আতেফ আবু খাতের। চনমনে এক কিশোর। খেলাধুলায় যে ছিল সবার সেরা। কয়েক মাস আগেও ১৭ বছরের এই কিশোরের ওজন ছিল ৭০ কেজি। গাজার খাদ্যের সংকট এতোটাই ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, শনিবার আতেফকে আল-শিফা হাসপাতালে ভর্তির পর দেখা যায় তার ওজন মাত্র ২৫ কেজি- যা ৯ বছরের শিশুর চেয়েও কম।
অনেক চেষ্টার পরেও আতেফকে বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসকরা জানান, মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে তার ওজন ৪৫ কেজি কমে গেছে। শুধুমাত্র অনাহারে থাকায় প্রাণ গেছে এই কিশোরের।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, শনিবার একদিনেই না খেতে পেয়ে মারা গেছেন অন্তত ৭ জন। দক্ষিণ গাজায় ইসরাইলি অভিযানের নিহত হয়েছেন রেড ক্রিসেন্টের এক কর্মীও। তবুও আকাশে ত্রাণ বোঝাই প্যারাসুটের দেখা মিললে প্রাণের মায়া ত্যাগ করেই সেখানে ছুটছেন হতভাগ্য ফিলিস্তিনিরা। ইসরাইলি সেনার বুলেট অথবা ক্ষুধার যন্ত্রণা- এই দু'টি পথই শুধু খোলা আছে তাদের জন্য।
গাজায় ত্রাণ সরবরাহ আটকে দিয়ে ইসরাইল যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে, তখন সশস্ত্র সহিংসতা নিয়ে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ হাজির করেছে আল জাজিরা। কাতারভিত্তিক এই সংবাদ সংস্থার দাবি, ২০২৩ এর অক্টোবরে সংঘাত শুরুর পর ইসরাইলের বিরুদ্ধে আনা যুদ্ধাপরাধের ৮৮ শতাংশ অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তই হয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরাইল সফর করেছেন মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। গেল সপ্তাহে হামাস-ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করেন তিনি। সফরকালে হামাসের প্রতিনিধিদের কাছে প্রস্তাব দেন অস্ত্র সমর্পণের। যদিও তা ফিরিয়ে দিয়ে হামাস জানিয়েছে, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ভূখণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার আগ পর্যন্ত অস্ত্র ছাড়বে না তারা।
এরআগে, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক মন্তব্য করেন, ইউরোপের অনেক দেশ যখন ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন গাজায় অভিযানের তীব্রতা বাড়িয়ে যুদ্ধ জিইয়ে রাখতে চান নেতানিয়াহু।
এদিকে, নতুন করে আরও এক ইসরাইলি জিম্মির ভিডিও প্রকাশের পর আবারও উত্তাল তেল আবিবের হোস্টেজ স্কয়ার। নেতানিয়াহু সরকারের পতন, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ইসরাইলের সাধারণ জনগণ।