ইসরাইলের হামলায় নিহত হওয়ার আগে ধারণ করা মেয়ের সঙ্গে আল-জাজিরার সাংবাদিক আনাস আল শরীফের এক আবেগঘন মুহূর্তের ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা যায়, ২৮ বছর বয়সী সাংবাদিক আনাস শিশুকন্যাকে জিজ্ঞাস করছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত এ অঞ্চল ছেড়ে সে চলে যেতে চায় কী না। শিশুকন্যার জবাব, সে গাজা ছাড়তে চায় না। গাজা ছেড়ে সে কাতার, জর্ডান, মিশর কিংবা তুর্কিতেও যেতে রাজি নয়।
ইসরাইল সন্ত্রাসী বললেও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজা যুদ্ধে সামনে থেকে সাংবাদিকতা করেছেন আনাস। এ কারণেই সে ইসরাইলিদের টার্গেটে পরিণত হয়েছিলো। স্বাধীন সাংবাদিকদের সংগঠনসহ জাতিসংঘের কর্মকর্তারা এর আগে আনাসকে ইসরাইলের হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।
তিনি ছিলেন আল জাজিরার আরবি ভাষার প্রতিবেদক, ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধের শুরু থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। ২৮ বছর বয়সী তরুণ এ সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্বের প্রশংসা করে সংবাদমাধ্যমটি।
মৃত্যুর মাত্র কয়েক মিনিট আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ গাজায় ইসরাইলের বোমাবর্ষণের ভিডিও শেয়ার করেন আনাস। লেখেন, ‘ইসরাইলি আগ্রাসনে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বিরতিহীন বোমাবর্ষণের শিকার হয় গাজা শহর।’
আল জাজিরা জানিয়েছে, আনাস তার মৃত্যুর পর প্রচার করার জন্য একটি বার্তা দিয়ে গেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, ‘আমি কখনই সংবাদকে বিকৃত বা ভুলভাবে উপস্থাপনের জন্য সত্য প্রচারে পিছপা হইনি। যারা নীরব ছিলেন। সৃষ্টিকর্তাই তাদের সাক্ষী।’
আরও পড়ুন:
গাজায় সাংবাদিকতা করে বেশ সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি। গাজার আল আকসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেন আনাস। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ফিলিস্তিনে ২০১৮ সালে বেস্ট ইয়াং জার্নালিস্ট পুরস্কার পান আনাস।
গাজায় গণহত্যা ও অনাহারে ধুঁকতে থাকা মানুষের দৃশ্য তুলে ধরায় প্রাণ দিতে হলো আনাস আল-শরিফসহ আল জাজিরার ৫ সাংবাদিককে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বাইছে।
আল জাজিরা জানিয়েছে, গাজার আল শিফা হাসপাতালের সামনে একটি সাংবাদিকদের তাবুতে হামলায় আনাসের সঙ্গে নিহত হন, আল জাজিরার আরেক সাংবাদিক মোহাম্মদ ক্রেক, ক্যামেরাম্যান ইব্রাহিম জাহের, মোয়ামেন আলীওয়া এবং তাদের সহযোগী মোহাম্মদ নওফেল। এ নিয়ে এ যুদ্ধে ইসরাইলের হামলায় গাজার ২শ'র বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন