রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ করতে বেশ তড়িঘড়ি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে কোনো না কোনোভাবে তা পিছিয়েই যাচ্ছে। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেও কোন সমাধানে পৌঁছাতে পারছেন না তিনি। শুক্রবারের রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর আবারও আলোচনায় আসছে বিষয়গুলো।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, পুতিন কোনভাবেই যুদ্ধ থামাতে চান না। এ বিষয়ে তার অনীহা রয়েছে। আর তাই শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ দিন দিন জটিল করে তুলছেন পুতিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন জেলেনস্কি।
জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে চান তিনি। শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংঘাত বন্ধ করতে চান। শনিবার ক্রেমলিনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন পুতিন। সেসময় যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। এছাড়াও ট্রাম্পের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠক সময়ের দাবি ছিলো।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘ট্রাম্পের সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। ইউক্রেন সংকট সমাধান ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। এই সংকটের মূল কারণ নিয়ে কথা বলেছি। সংকট সমাধানে এসব দূর করতে হবে।’
রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে পরস্পরের ভিন্ন ভিন্ন মতের মধ্যেই এবার ট্রাম্পকে নতুন প্রস্তাব দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনের দোনবাসের দোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের সরিয়ে নিতে হবে। বিনিময়ে ঝাপোরিঝিয়া ও খেরসনের সম্মুখসারিতে যুদ্ধ থামাবে মস্কো।
কিয়েভের অভিযোগ, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে অবৈধভাবে ক্রিমিয়া দখলে নেয় রাশিয়া। এর ৮ বছর পর সেখানে আগ্রাসন চালায় তারা। এবার দোনবাসকে রাশিয়ার অঞ্চল দাবি করছে মস্কো। এবং এর লুহানৎস্কের বেশিরভাগ ও দোনেৎস্কের প্রায় ৭০ শতাংশ রাশিয়ার দখলে রয়েছে। তবে এরইমধ্যে রাশিয়ার এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন:
রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তিচুক্তিতে ঘুরেফিরেই অঞ্চল বিনিময়ের বিষয়টি সামনে আসছে। সূত্রের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য ট্রাম্প-জেলেনস্কির বৈঠকে জেলেনস্কিকে অঞ্চল বিনিময়ের বিষয়ে সম্মত হতে জোর দিতে পারেন ট্রাম্প।
যদিও ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়নেকে একা ছেড়ে দেবে না বলে জানান জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মার্জ।
জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মার্জ বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। একইসঙ্গে ইউক্রেনে কীভাবে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে আশার কথা হলো, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্র পাশে রয়েছে।’
এদিকে ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠকের পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়ার বাসিন্দারা।
বাসিন্দারা বলেন, ‘ট্রাম্প-পুতিনে বৈঠকের খবর দেখলাম। তবে কোন স্পষ্ট উত্তর পাইনি। সবাই সুখবরের অপেক্ষা করছি। আমরা চাই বিশ্ব পরিস্থিতি স্থিতিশীল হোক। মনে হয় এটা কেবল শুরু। যদিও এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে অবশ্যই এটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, তবে এটি কেবল শুরু।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির মধ্যেও রুশ সেনারা ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ কিয়েভের।