পুতিনের সঙ্গে যেকোনো বৈঠকে রাজি জেলেনস্কি

ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি
বিদেশে এখন
0

জেলেনস্কি-পুতিনের বৈঠক নিয়ে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে শুরু হতে পারে। এদিকে ১০ দিনের মধ্যেই ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশা করছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। ওভাল অফিসে ট্রাম্প-জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ইউক্রেনের নিরাপত্তা এবং পুতিনের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক আয়োজন। যদিও ইউরোপীয় নেতাদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে একমত নন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এছাড়া পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বা ত্রিপক্ষীয় যেকোনো ধরনের বৈঠক বসতে রাজি জেলেনস্কি। ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের এক ফাঁকে পুতিনের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গেলো শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এর তিন দিনের মাথায় হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিসহ বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

ট্রাম্প শুরু থেকেই বলে আসছেন বিবাদমান রাশিয়া-ইউক্রেন এ দুই দেশের নেতারা মুখোমুখি হলেই শান্তি প্রতিষ্ঠা অনেকটা সহজ হবে। সেই লক্ষ্যেই তিনি আলোচনা চালিয়ে যান ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে। টানা কয়েক দফার আলোচনা শেষে ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে। যেখানে পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে তিনিও উপস্থিত থাকবেন।

হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে জেলেনস্কি জানান, সংঘাত অবসানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বা ত্রিপাক্ষিক সব আলোচনাতেই রাজি তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হলেই ইউক্রেনে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন তিনি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এছাড়া ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে ট্রাম্পের। পুতিনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য প্রস্তুত ইউক্রেন।’

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকটি হতে পারে জানিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর। দুই পক্ষকে বৈঠকে রাজি করানোয় ট্রাম্পের ভূয়সী প্রসংশা করেন তিনি। তবে বৈঠকটি কোথায় হবে, তা এখনো নিশ্চিত হয়নি।

দ্বিতীয় যে বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে তা হলো ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা। বৈঠকে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সেনা, গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক সরঞ্জামের বিষয়ে সহায়তা চেয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য ইউরোপকে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্র।

আরও পড়ুন:

জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প স্বাগত জানান ইউরোপীয় নেতাদের। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ফিনল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর শীর্ষ নেতারা ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। ইউরোপীয় নেতাদের অন্যতম চাওয়া ছিল যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আজ চমৎকার আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেনে হত্যাকাণ্ড ও যুদ্ধ বন্ধে এখন পর্যন্ত খুবই সফল আলোচনা হয়েছে। আমাদের সবার একই লক্ষ্য, সেটি খুব সহজ। হত্যাকাণ্ডের অবসান চায় সবাই। দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই কথা হয়েছে। এবার তাদের মধ্যে একটি দুর্দান্ত বৈঠক হবে।’ 

যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছাড়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অনেকটা নিশ্চুপ ছিলেন জেলেনস্কি। তার বক্তব্য, এ মুহূর্তে যুদ্ধ বন্ধ করা জরুরি। রাশিয়াকে থামাতে হবে।

এদিকে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক চলাকালেই পুতিনকে ফোন করেন ট্রাম্প। বৈঠকের মাঝখানে বিরতি দিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর আবারও শুরু হয় আলোচনা। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসন শুরুর পর প্রথমবারের মতো আলোচনার টেবিলে আসলো ইউক্রেন যুদ্ধ। তিক্ত সম্পর্কের দুই দেশের মুখোমুখি করা কতটা সহজ হবে তা এখন দেখার বিষয়।

এসএইচ