এছাড়া সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের প্রাণঘাতী ঢেউ ও বিপজ্জনক ঝড় সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল এবং বারমুডার মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় হারিকেন সেন্টার।
আটলান্টিক মহাসাগরে চোখ রাঙাচ্ছে হারিকেন এরিন। স্যাটেলাইট ছবিতে উঠে এসেছে ঘূর্ণিঝড়ের ভয়ানক চিত্র।
সাগর উত্তাল হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার উপকূলের আউটার ব্যাংকস এলাকায় এর প্রভাব পরতে শুরু করেছে বুধবার থেকেই। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের অন্যান্য অংশের জন্য হারিকেন এরিন বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার সতর্ক করে দিয়েছে যে, ক্যাটাগরি ২ শক্তির হারিকেনে ঘণ্টায় দেড়শ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় ক্যাটাগরি-২ শক্তির এই ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষায় নর্থ ক্যারোলিনার উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এছাড়া দেশটির পূর্ব উপকূলের সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের প্রাণঘাতী ঢেউ ও বিপদজনক ঝড় সম্পর্কে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
নর্থ ক্যারোলিনার জরুরি ব্যবস্থাপনা পরিচালক উইল রে বলেন, ‘হারিকেন এরিন এরমধ্যেই সমগ্র নর্থ ক্যারোলিনা উপকূলের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং প্রাণঘাতী স্রোত তৈরি করছে। যা সপ্তাহব্যাপী স্থায়ী হবে। আমরা উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছি। নর্থ ক্যারোলিনা উপকূলের কোথাও সাঁতার কাটা উচিত হবে না।’
আরও পড়ুন:
আজ (বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট) ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল এবং বারমুডার মাঝামাঝি এলাকায় সরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় ২০ ফুট পর্যন্ত উঁচু ঢেউ সমুদ্র তীরে আছড়ে পড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার। এতে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাগুলো প্লাবিত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া ভারি ঢেউয়ের কারণে সমুদ্র সৈকতে উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির আভাস দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নর্থ ক্যারোলিনার বেশিরভাগ উপকূলরেখায় ঝড়ো বাতাস, জোয়ারে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নর্থ ক্যারোলিনার গভর্নর জোশ স্টেইন বলেন, ‘হারিকেন এরিন বর্তমানে ক্যাটাগরি-২ এ রয়েছে। যা আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঝড়টি এখনও বিপজ্জনক। এরমধ্যেই নর্থ ক্যারোলিনার অনেক মানুষকে প্রভাবিত করছে। উপকূলের লোকজনকে সাবধান থাকতে হবে। বর্তমান পূর্বাভাসের উপর ভিত্তি করে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অঙ্গরাজ্যের বেশিরভাগ উপকূলরেখায় ঝড়ো বাতাস, জোয়ার ও ঝড়ের কারণে বন্যার আশঙ্কা করছি।’
১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম বলা হয়ে থাকে। এবছর এখন পর্যন্ত চারটি শক্তিশালী হারিকেন আঘাত হেনেছে। আর নর্থ ক্যারোলাইনার দিকে ধেয়ে আসা হারিকেন এরিনকে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
তবে নর্থ ক্যারোলাইনার জন্য স্বস্তির খবর এরিন সরাসরি সেখানে আঘাত হানার আশঙ্কা নেই। আগে ২০২৪ সালে হারিকেন হেলেনের প্রভাবে নর্থ ক্যারোলিনায় প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। যা অঙ্গরাজ্যটির প্রায় দুই বছরের বাজেটের সমান।