ট্রাম্পের শুল্কনীতিতে দুঃস্বপ্নের ভেতর দিয়ে সময় কাটছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। পোশাক খাত থেকে শুরু করে হিমায়িত খাদ্য রপ্তানির সঙ্গে জড়িত লাখ লাখ কর্মী চাকরি হারানো শঙ্কায় পড়েছে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে পাঁচ দফা আলোচনা করেও শুল্ক ও বাণিজ্য নীতি নিয়ে কোনো সমাধানে আসতে পারেনি নয়াদিল্লি। শুল্কের চাপে এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার হারাতে বসেছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। উচ্চ শুল্কের কারণে ভারতের প্রায় ৯ হাজার কোটি ডলার রপ্তানি বাজারের প্রায় ৫৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্কারোপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে ভারতের পোশাক খাত, হীরা ও অলংকারের বাজারসহ চিংড়ি ও হিমায়িত খাদ্য। গেল বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৭৩৮ কোটি ডলার মূল্যের সামুদ্রিক খাবার রপ্তানি করেছে ভারত। এরমধ্যে ৯২ শতাংশই চিংড়ি।
সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে ভারতের তৈরি পোশাক খাতে। বাংলাদেশ, চীনসহ প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না তারা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এরইমধ্যে অন্য দেশে বিকল্প বাজারে সন্ধান করছেন সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন:
তিরুপুর রপ্তানিকারক ও প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতির এমপি মুথুরাথিনাম বলেন, ‘মার্কিন শুল্ক ভারতের জন্য বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা ভারতের জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ। তাদের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ হলেও, বাকি বিশ্বের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যেতে হবে।’
ভারতের রপ্তানি শিল্পের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা চাকরি হারানো শঙ্কায় পড়েছেন। মার্কিন শুল্কে ক্ষতির মুখে ভারতের প্রায় ৬ কোটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা।
মার্কিন পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বান জানান দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘ট্রাম্পের অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের ফলে ভারতের সব দেশিয় শিল্প বন্ধ হওয়ার পথে। কারণ রপ্তানি স্থবির হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত মার্কিন পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্কারোপ করা। তা না হলে এদেশের কৃষক, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা ধ্বংস হয়ে যাবে।’
এমন অবস্থায় শুক্রবার একটি বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দিনের সফরে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হবে নয়াদিল্লি ও টোকিওর মধ্যে। রোববার সাংহাই সম্মেলনে যোগ চীনের উদ্দেশে রওনা হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনে এশিয়া সফরে প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে গভীর কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে ভারত।