বন্দুক হামলার আগেও ক্যাথলিক স্কুলটিতে বন্দুকধারীর যাতায়াত ছিলো: মিনিয়াপোলিস পুলিশ

বন্দুক হামলার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ
বিদেশে এখন
0

ভয়াবহ বন্দুক হামলার আগেও যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিসের ক্যাথলিক স্কুলটিতে ঘাতক বন্দুকধারীর যাতায়াত ছিলো বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে, হামলাকারীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা এক নোটবুকে ইহুদিসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য লেখা ছিলো। এমনকি হামলাকারী শিশু হত্যার নেশায় মগ্ন ছিলেন বলেও জানান মিনেসোটার ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল।

শোকাচ্ছন্ন যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিস। অ্যানান্সিয়েশন চার্চের স্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত দুই শিশুর স্মরণে চলছে প্রার্থনা। শোক জানিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে দেয়া হচ্ছে ফুল। কান্নায় ভেঙে পড়ছন স্বজনরা।

গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ফ্লেচার মার্কেলের শোকাহত বাবার আবেগঘন বার্তা। এমন ঘটনার শিকার হয়ে আর কাউকে যেন চলে যেতে না হয়, সেজন্য প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান তার।

শিক্ষার্থী ফ্লেচার মার্কেলের বাবা বলেন, ‘আমাদের হৃদয় এবং জীবনের এ ক্ষত কখনও পূরণ হওয়ার নয়। আশা করি আহতরাও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে সক্ষম হবে।’

মিনিয়াপোলিস পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুক হামলার ঘটনায় ওই দিন ১৭ নয় আহত হয়েছেন ১৮ জন। আহত এক শিশুকে দূরের এক হাসপাতালে ভর্তি করায় প্রথমদিকে তার তথ্য পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় সহিংস বন্দুক হামলার ঘটনা বন্ধে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন আরও কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছেন অঙ্গরাজ্যটির ডেমোক্র্যাট নেতারা। হামলাকারী ২৩ বছর বয়সী রবিন ওয়েস্টম্যান তিনটি মারণঘাতী যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করে, যেগুলো আইন অনুযায়ী এখনও সাধারণ মানুষের কাছে রাখার বৈধতা রয়েছে।

বাসিন্দারা বলেন, ‘আমরা আমাদের বাচ্চাদের ভালোবাসি। তাই এমন ঘটনা বন্ধে মারণঘাতী অস্ত্রের ওপর ফেডারেল নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। এসব অস্ত্রের অ্যাক্সেস থাকা উচিত নয়। এটি নিশ্চিত করা না গেলে; আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষতি এবং ট্রমা কোনো দিন বন্ধ হবে না।’

আরও পড়ুন:

মিনিয়াপোলিস পুলিশ ও এফবিআই যৌথভাবে তদন্ত করলেও হামলার আসল রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। তবে ওই উপাসনালয় এবং স্কুলটিতে বন্দুকধারীর আগেও আসা-যাওয়া ছিলো বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার মিনিয়াপলিসের পুলিশ প্রধান ব্রায়ান ও’হারা বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, বন্দুকধারী আগেও সেখানে প্রার্থনা করতে যেতো। তার মা সাবেক একজন কর্মচারী হওয়ায় স্কুলেও তার যাতায়াত ছিলো। তাই স্পষ্টতই, বন্দুকধারী এবং স্কুলের মধ্যে একটি সংযোগ রয়েছে। আরও বিস্তারিত জানতে এবং হামলার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে, হামলাকারীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া একটি নোটবুকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইহুদিসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতি হামলাকারী তার প্রচণ্ড ঘৃণা তুলে ধরেছেন বলে জানিয়েছেন মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল। এছাড়াও, ঘাতক বন্দুকধারী শিশু হত্যার নেশায় মগ্ন ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জোসেফ থম্পসন বলেন, ‘হামলাটি কেন এবং কীভাবে ঘটেছে তা জানতে আমরা তদন্ত করছি। শ্যুটার শত শত পৃষ্ঠার লেখা রেখে গেছে। যেখানে বন্দুকধারীর পরিকল্পনা বর্ণনা করা হয়েছে। বন্দুকধারী নিজের মানসিক অবস্থারও বর্ণনা করেছেন। যেখানে ইহুদি সম্প্রদায়সহ অনেক জাতিগোষ্ঠীর প্রতি তার ঘৃণার কথা তুলে ধরেছেন। এছাড়াও বোঝা গেছে 'শিশু হত্যার জন্য মগ্ন' ছিলের তিনি।’

হামলায় ২০ হতাহতের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পতাকা অর্ধনমিত রাখছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইএ