আমেরিকার জঙ্গলে নতুন আশা, আবারও বাড়ছে জাগুয়ারের উপস্থিতি

জাগুয়ার
বিদেশে এখন
0

সোনালি চামড়ার ওপর কালো দাগ, আকারে বাঘের মতো হলেও দেখতে কিছুটা চিতাবাঘের মতো জাগুয়ার। আমেরিকার জঙ্গলের সবচেয়ে বড় বিড়ালজাতীয় প্রাণী। এক সময় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল এ শিকারি প্রাণীটি। সাম্প্রতিক জরিপ বলছে, মেক্সিকোতে আবারও বাড়ছে জাগুয়ারের সংখ্যা। তবে আশার এ আলো এখনও পুরোপুরি নিরাপদ নয়।

রহস্যময় জঙ্গলের রাজা— জাগুয়ার। লাতিন আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর অরণ্যে বেড়েছে চিতা বাঘের মতো দেখতে এ প্রাণীর আনাগোনা। মেক্সিকোর সবশেষ জাতীয় জরিপ বলছে জঙ্গলটিতে এখন পাঁচ হাজার ৩২৬টি জাগুয়ার রয়েছে যা ২০১০ সালের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।

২০১৮ সালের পর থেকে জাগুয়ার সংখ্যা বেড়েছে ১১ শতাংশ। গবেষকরা বলছেন, নতুন সুরক্ষিত এলাকা এবং বন রক্ষার উদ্যোগই এ প্রজননে বড় ভূমিকা রেখেছে।

মেক্সিকোর পরিবেশবিদ হাম্বার্তো পেনা ফুয়েন্তেস বলেন, ‘এ বছরের হিসেবে পাঁচ হাজার ৩০০ জাগুয়ার আছে, যা ২০১৮ সালের তুলনায় দশ দশমিক সাত শতাংশ বেশি। জাগুয়ার প্রায় এক কোটি হেক্টরের সংরক্ষিত এলাকায় স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করছে, যার মধ্যে রয়েছে ১২ লাখ হেক্টর নতুন সংরক্ষিত ভূমি, আট মিলিয়ন হেক্টর পূর্বের সংরক্ষিত এলাকা এবং ১০ লাখ হেক্টর কমিউনিটি রিজার্ভ। এটি প্রায় চারটি মেক্সিকান রাজ্যের সমান, সবই জাগুয়ারের জন্য সংরক্ষিত।’

জরিপে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি জাগুয়ার আছে ইউকাতান উপদ্বীপে— এক হাজার ৬৯৯টি। এরপর দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, উত্তর-পূর্ব ও মধ্য মেক্সিকো, উত্তর প্রশান্ত উপকূল এবং মধ্য প্রশান্ত উপকূলে। জরিপটি করা হয়েছে ১৫টি রাজ্যে ৯০ দিন ধরে বসানো ৯২০টি বিশেষ সেন্সর ক্যামেরার সহায়তায়।

আরও পড়ুন:

তবে জাগুয়ারের বাসস্থান ধ্বংস, অবৈধ শিকার, পাচার এখনও থামেনি। এসব না কমলে পাঁচ হাজার জাগুয়ার থেকে আট হাজারে পরিণত হতে সময় লাগবে অন্তত তিন দশক।

সংরক্ষণবাদীরা বলছেন, অবৈধভাবে চামড়া, খুলি, নখ ও দাঁতের ব্যবসা বন্ধে এখনই কড়া পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। স্থানীয় মানুষকে জাগুয়ার রক্ষায় আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে। একইসঙ্গে অনলাইন ও অফলাইনে এ প্রাণীর অবৈধ ব্যবসা ঠেকাতে নিতে হবে শক্ত পদক্ষেপ।

হাম্বার্তো পেনা ফুয়েন্তেস বলেন, ‘জাগুয়ার এখনও একটি বিপন্ন প্রজাতি। এটিকে বিলুপ্তির ঝুঁকি থেকে মুক্ত করতে আমাদের আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, তবে জাগুয়ারের সংখ্যা বাড়ার বিষয়টি আমাদের অবাক করেছে।’

প্রকৃতি ও প্রাণী সংরক্ষণের সমন্বিত উদ্যোগ না নিতে পারলে আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে জাগুয়ার।

এসএস