অক্টোবরের ১ তারিখ চীনের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৪৯ সালের এ দিনে মাও সেতুং চীনের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালের আগে পর্যন্ত এ স্বাধীনতা দিবসেই বিরাট পরিসরে সামরিক কুচকাওয়াজ আয়োজন করতো চীন।
বিবিসির তথ্য বলছে, ২০১৪ সালে ৩ সেপ্টেম্বরকে জাপানি আগ্রাসন প্রতিরোধ ও চীনের বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করে বেইজিং। আর চলতি বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ বিশেষ দিনে বিরাট এক সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছে পূর্ব এশিয়ার দেশটি। তাই এবারের কুচকাওয়াজ নিয়ে চীনের প্রস্তুতি আর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের আগ্রহ দুটোই তুঙ্গে।
হিরোশিমা ও নাগাসিকিতে পারমাণবিক হামলার পর ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট রেডিওতে সম্প্রচারিত ভাষণে আত্মসমর্পণের ঘোষণা দেন জাপানের সম্রাট হিরোহিতো। শেষ হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তবে জাপানের প্রতিনিধিদল আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর।
আত্মসমর্পণের দলিলে বর্ণিত আছে, জেনারেল অর্ডার-১ এর আওতায় চীন, ইন্দোচীন ও ফার্মোসা থেকে জাপানকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়। জেনারেল অর্ডার অনুসারে ৯ সেপ্টেম্বর চীনের নানকিং এ অ্যাক্ট অব সারেন্ডারে স্বাক্ষর করে জাপানি কমান্ডার ও প্রতিনিধিদল। যদিও এ আত্মসমর্পণকে ফার্মোসার সার্বভৌমত্বের হস্তান্তর হিসেবে দেখে আসছে চীন। তাই আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের পরের দিন ৩ সেপ্টেম্বরকেই জাপানের বিরুদ্ধে চীনের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করছে বেইজিং।
যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, বিজয় দিবসকে সামনে আনা হলেও মূলত নিজেদের আধুনিক সমরাস্ত্রের সক্ষমতার জানান দিতে সাংহাই সম্মেলনের পর ভিক্টরি ডে তে বিশেষ এ প্যারেডের আয়োজন করেছে শি প্রশাসন। যদিও এ কুচকাওয়াজে থাকছেন না যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর প্রধান ছাড়াও জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা, ইরানের রাষ্ট্রপ্রধানের উপস্থিতি এখানে ভিন্ন গুরুত্ব বহন করছে এমন দাবি বার্তা সংস্থা এপির।
চীন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের এ জোটকে ‘অস্থিতিশীলতার অক্ষ’ হিসেবে বর্ণনা করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের দাবি, চার দেশের এ কূটনৈতিক সংহতি ভাবিয়ে তুলছে পশ্চিমা বিশ্বকে।