ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের আল্টিমেটাম কিছুটা হলেও আমলে নিয়েছেন পুতিন। শান্তি আলোচনার জন্য ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মস্কোতে।
তবে আলোচনায় অগ্রগতি চাইলে ইউক্রেনকে আয়োজন করতে হবে জাতীয় নির্বাচন, বিরোধপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মালিকানা নির্ধারণে মানতে হবে গণভোটের রায়, বাতিল করতে হবে সামরিক আইনও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রেমলিনের এই তিন শর্ত নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকলেও কিয়েভ-মস্কোর মূল দ্বন্দ্বের জায়গা এখনও ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রের সেনা মোতায়েন প্রশ্নে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া জাখারোভা সাফ জানিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধ হলে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে কিয়েভের পশ্চিমা মিত্রদের সেনা উপস্থিতি কখনোই মানবে না মস্কো।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও একে ইউরোপের ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে ক্রেমলিন।’
রাশিয়া থেকে যখন এ ধরনের বার্তা দেয়া হচ্ছে তখন ইউক্রেনকে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেয়া যায় এ বিষয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে প্যারিসে বৈঠক করেছেন ইউরোপের নেতারা।
আরও পড়ুন:
রয়টার্স দাবি করছে, ইউক্রেনের মিত্রশক্তির জোট কোলিশন অব ইউলিংয়ে যোগ দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে পশ্চিমের অন্তত ৩০টি রাষ্ট্র। আর এদের অনেকেই যুদ্ধ পরবর্তী ইউক্রেনে পিস কিপিং ফোর্স বা শান্তি রক্ষী বাহিনীতে সেনা পাঠাতেও রাজি— এমন আভাস দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
যদিও এ শান্তি রক্ষী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, যুদ্ধ পরবর্তী ইউক্রেনে এই পিস কিপিং ফোর্স থাকা অবস্থায় যদি রাশিয়া ফের হামলা চালায় তাহলে মস্কোর সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ জড়িয়ে পড়তে পারে ইউরোপ। আর এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার লেন্সে দেখলে, ক্রেমলিন কখনোই এই ঝুঁকি নেবে না।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক সমীর পুরী বলেন, ‘ইউক্রেনে কী দরনের সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে তা নিশ্চিত নই। তারা কি শান্তি রক্ষী বাহিনী হবে? এটা নির্ভর করে ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর শান্তির নিশ্চয়তা দেয়া হচ্ছে কি না তার ওপর। নাকি সেখানে স্থিতিশীলতা আনার জন্য একটি বাহিনী পাঠানো হবে যা ইউক্রেনীয়দের সবশেষ ভরসা হতে যাচ্ছে।!’
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, এই শান্তি বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বাধা হতে পারে ইউক্রেনের ভৌগলিক অবস্তানও। পোল্যান্ড, রোমানিয়ার মতো ন্যাটোভুক্ত দেশ ইউক্রেনের কাছাকাছি থাকায়, এই ভূখণ্ডটি ব্যবহার হতে পারে পশ্চিমা সামরিক জোটের স্থিতিশীল ঘাঁটি হিসেবেও।
আর এই সম্ভাব্যতাকে গুরুত্ব দিলে কিয়েভে ইউরোপের পিস কিপিং ফোর্সের উপস্থিতি নিয়ে কোনো আপস করবে না মস্কো- এমন দাবি বিশ্লেষকদের।