স্বপ্নপূরণে কাঙ্ক্ষিত দেশগুলোর শীর্ষে বরাবরই যুক্তরাষ্ট্র। মোটা বেতনের চাকরি, বিলাসবহুল জীবনসহ নানা হাতছানি। সেই স্বপ্নে বিভোর হয়ে প্রতি বছর দেশটিতে বিভিন্ন ভিসায় পাড়ি জমান লাখো অভিবাসী।
তবে সময়ের সঙ্গে কঠিন হচ্ছে সেখানকার জীবন। ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির ধকল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। নথিপত্রে ঝামেলা থাকলেই অভিবাসীদের ধরে ফেরত পাঠানো হচ্ছে দেশে ।
এ পরিস্থিতিতে মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে উঠেছে আমেরিকার চাকরির বাজার। এ বিষয়ে শুক্রবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো। যেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। যা ২০২১ সালের পর সর্বোচ্চ। গেলো আগস্টে কেবল ২২ হাজার নতুন কর্মী চাকরির বাজারে যুক্ত পেয়েছে। যেখানে অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশা ছিলো, ৭৬ হাজার ৫০০ কর্মী নিয়োগের। এছাড়াও, গত জুন মাসে ১৩ হাজার কর্মী কমেছে জব মার্কেট থেকে। মার্কিন ইতিহাসে গত ৪ বছরে প্রথমবারের মতো এ ঘটনা ঘটে।
শুধু তাই নয় ১৬ থেকে ২৪ বছরের তরুণ বেকারের হার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশে। যা জাতীয় বেকারত্বের হারের দ্বিগুণ।
আরও পড়ুন: বাতাসের আর্দ্রতা থেকে বিশুদ্ধ পানি উৎপাদন করছে আমিরাতের এমএ হাওয়ার
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে নতুন নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো। আর এতেই বেকারত্বের হার বাড়ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
অর্থনীতি বিশ্লেষক মার্ক হামরিক বলেন, ‘নতুন নিয়োগ থেমে গেছে। এপ্রিলে শুল্ক ঘোষণার পর থেকেই এ অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। নিয়োগকর্তারা বেশ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। চাকরি প্রার্থীদের ভাগ্য খুব একটা ভালো নয়। বেকারত্বের হার খুব শক্তিশালী মনে হচ্ছে।’
চাকরির বাজারের মন্দাভাবের প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভেও পড়বে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।
অর্থনীতি বিশ্লেষক আরও বলেন, ‘দিন দিন চাকরির বাজার স্থবির হয়ে পড়ছে। গত কয়েকমাস ধরেই চিকিৎসা ও সামাজিক সহায়তামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোতে মন্দাভাব দেখতে পাচ্ছি। এতে এ সংক্রান্ত রিজার্ভে প্রভাব পড়তে পারে।’
তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানান হোয়াইট হাউসের অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা।
হোয়াইট হাউস অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা কেভিন হেসেট বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুবই আশাবাদী একজন মানুষ। সামনের দিনগুলিতে নতুন ফ্যাক্টরিসহ আরও আরেক প্রতিষ্ঠান চালু হবে। সেখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর এ প্রতিবেদনের পরই নিম্নমুখী মার্কিন শেয়ারবাজারে স্টকের দর। কমতে শুরু করেছে নাসদাক, এসএনপি ফাইফ হান্ড্রেড, ডাউজোনসসহ বেশ কিছু শেয়ার।