ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনোকিছুরই যেন তোয়াক্কা করছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সম্প্রতি চীন সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জন উনের সঙ্গে বৈঠকের পর আরও আপসহীন হয়ে ওঠেছেন তিনি। শান্তি প্রতিষ্ঠায় পশ্চিমা চেষ্টার বিপরীতে শনিবার রাতে সবচেয়ে বড় হামলা চালালো মস্কো।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর এবারই প্রথম পুতিন বাহিনী এক রাতে ৮ শ’র বেশি ড্রোন এবং ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ চালিয়েছে বলে দাবি করছে কিয়েভ। এমনকি এসব হামলায় যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো কিয়েভে থাকা ইউক্রেনের প্রধান সরকারি ভবনকে লক্ষবস্তু করেছে রুশ বাহিনী। এতে আগুন লেগে ভবনটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কিয়েভ ছাড়াও দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির জন্মস্থান ক্রিভি রিহ, ওডেসা, ক্রেমেনচুক জাপোরিঝিয়াসহ আরও অনেক শহরের বেসামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন। ভয়াবহ হামলায় বহু বেসামরিক মানুষ হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ। যদিও রাশিয়ার ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে ৭৫১টি ড্রোন এবং চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার দাবি ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা ইউনিটের।
আরও পড়ুন:
যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২৬টি পশ্চিমা দেশের পক্ষ থেকে ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনায় আগেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে অন্য কেনো দেশ সেনা মোতায়েন করলে দাঁতভাঙা জবাব দেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই একরাতে নজিরবিহীন এ হামলা চালালো রাশিয়া।
এ অবস্থায় এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, অবিলম্বে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া আরেক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা অভিযোগ করেছেন, এভাবে হামলা চালিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তির লক্ষ্যে চলমান কূটনীতিক প্রচেষ্টাগুলো প্রত্যাখ্যান করছেন। তাই অতি দ্রুত মিত্র দেশগুলোকে রাশিয়ার তেল, গ্যাস বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। এমনকি ইউক্রেনের জন্য আরও বিমান প্রতিরক্ষা সহায়তা জোরদারেও আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।