ব্রিটিশ রাজ পরিবারের প্রিন্সেস ডায়ানা ও রাজা চার্লসের ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি। ২০২০ সালে রাজপরিবার ছেড়ে স্ত্রী মেগানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় পাড়ি জমান। মূলত মার্কিন মডেল ও অভিনেত্রী মেগান মার্কলকে বিয়ে করার পর থেকেই অশান্তি লেগে ছিল রাজপরিবারে। শ্বেতাঙ্গ না হওয়ায় মেগানকে ব্রিটিশ রাজপরিবার থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠে।
এরপরই হ্যারির নিরাপত্তায় কাঁটছাঁট করা নিয়ে দানা বাঁধে বিতর্ক। পরে বিষয়টি মামলা পর্যন্ত গড়ায়। তবে সম্প্রতি বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আবেগপ্রবণ হয়ে হ্যারি বলেন, তিনি আইনি লড়াই চান না। ফিরতে চান রাজ পরিবারে। ক্যান্সার আক্রান্ত রাজা তৃতীয় চার্লসের স্বাস্থ্য নিয়েও উদ্বেগ জানান হ্যারি।
রাজা তৃতীয় চার্লস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসার পরই ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষবার বাবার সঙ্গে দেখা করেছিলেন হ্যারি। এরপর গেলো দেড় বছরের বেশি সময় ধরে দেখা নেই বাবা-ছেলের। পরিবারের অন্য সদস্য এমনকি বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ নেই হ্যারির। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষ।
যুক্তরাজ্যের স্থানীয় এক নারী বলেন, ‘রাজপরিবারে যা ঘটেছে তা দুঃখজনক। এখানে সবারই এগিয়ে যাওয়া উচিত। সবকিছু ভুলে পরিবারের কাছে ফেরা উচিত।’
আরও পড়ুন:
এমন অবস্থায় দাদি রানি এলিজাবেথের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে ফেরেন হ্যারি। গুরুতর অসুস্থ শিশুদের এক বাৎসরিক দাতব্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দীর্ঘদিন ধরেই হ্যারি এ দাতব্য কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত আছেন। সবকিছু ভুলে বাবা ছেলে এক হতে পারেন বলে আশাবাদী অনেকে।
ইতিহাসবিদ ও লেখক অ্যান্থনি সেলডন বলেন, ‘আমার মতে রাজতন্ত্রের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। রাজপরিবারের সঙ্গে ছোট ছেলে হ্যারির বিচ্ছেদ দেখতে কেউই পছন্দ করে না। সবাই খুব খুশি হবে যদি তারা আবার এক হয়। তবে এ বিষয়ে তাদের নিজেদের উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
তবে এ সফরে ৭৬ বছর বয়সী রাজা চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন কিনা তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তার এ সফর রাজপরিবারের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর পথ অনেকটা প্রশস্ত করেছে।
পিপল ম্যাগাজিন সাময়িকীর প্রধান সাইমন পেরি বলেন, ‘গুঞ্জন বাড়ছে হ্যারি তার বাবা রাজা চার্লসের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। সময় অনেক কিছু পরিবর্তন করেছে। গত তিন-চার বছর আগেও বিষয়টি অনেক জটিল ছিলো। তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলো। তারা দীর্ঘ সময় কথাও বলছেন না। আক্ষরিক অর্থেই কেনো যোগাযোগ ছিলো না।’
বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে রাজপরিবারের ব্যক্তিগত পারিবারিক বিষয় নিয়ে জনসম্মুখে আলোচনা করা হয় না। হ্যারিও এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি। রাজপরিবার ছাড়ার পর বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এবং তার আত্মজীবনীতে রাজপরিবারের সমালোচনা করে আসছেন হ্যারি। এমনকি তার বাবা ও বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম সম্পর্কেও কড়া মন্তব্য করেন।