২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে ইনস্ট্যান্ট নুডলস ও রামেনের বাজার ছিল পাঁচ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের। যা পরের ১০ বছরে সাড়ে নয় হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে আভাস মিলেছে। শুধু এশিয়ান ক্যুইজিনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলেই নয়, সারা পৃথিবীতে দ্রুত রান্নার উপযোগী খাবারের চাহিদা বৃদ্ধি, এই বাজার দ্রুত সম্প্রসারণের বড় কারণ।
সুযোগটি লুফে নিয়ে রামেনের ব্যবসা ১০ গুণ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে এগোনোর ঘোষণা দিলো জাপানের বহুজাতিক ফাস্ট ফুড চেইন ইয়োশিনোয়া। গিউডন রেস্টুরেন্টস চেইনে সারা বিশ্বে দ্বিতীয় শীর্ষ ইয়োশিনোয়া ১৮৯৯ সাল থেকে সস্তা, সুস্বাদু ও দ্রুত খাওয়ার উপযোগী খাবার পৌঁছে দিচ্ছে ভোক্তাদের কাছে। গিউডন বিফ বোলস বা সেদ্ধ গরুর মাংস-ভাত আর উডন নুডলস ইয়োশিনোয়ার জনপ্রিয়তম দুই পণ্য। ব্যবসা বাড়াতে তৃতীয় স্তম্ভ হিসেবে রামেনের দিকে নজর প্রতিষ্ঠানটির। লক্ষ্য, আগামী পাঁচ বছরে রামেনকে জাপানি মুদ্রায় ৪০০ কোটি ইয়েনের বাজারে পরিণত করা।
জাপানের ইওশিনোয়া হোল্ডিংস ভাইস প্রেসিডেন্ট নোরিহিরো ওজাওয়া বলেন, ‘যখন বিদেশিরা জাপানি খাবারের কথা ভাবে, তাদের মাথায় প্রথম যে নামটা আসে, সাধারণত সেটি হলো সুশি। এরপরই আসে রামেনের কথা। বহির্বিশ্বে প্রবৃদ্ধির পরিমাণ এখনও অস্পষ্ট হলেও আমরা ২০৩৪ সালের জন্য একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। এখন থেকে দশ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে রামেনের বাজারে শীর্ষে পৌঁছাতে চাই আমরা।’
২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বে রামেনের শীর্ষ বিক্রেতার খাতায় নাম লেখাতে চায় ইয়োশিনোয়া। খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য, বিশেষ করে অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত চাল আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে রপ্তানিকৃত গরুর মাংসের দাম নিয়ে বিপাকে জাপানের রেস্তোরাঁগুলো। তার ওপর বছরের পর বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতির চাপ থেকে বেরিয়ে আসা দেশটিতে পণ্যের দাম বাড়ানোও সম্ভব নয়। এসব সংকট থেকে বের হওয়ার উপায় খুঁজতে গিয়েই রামেনের জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
জাপানের ইওশিনোয়া হোল্ডিংসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তেৎসুয়া নারুসি বলেন, ‘বহির্বিশ্বে রামেনের বাজার বেশ সম্ভাবনাময় বলে মনে করছি আমি। কারণ জাপানের তুলনায় অন্যান্য দেশের বাজারগুলোতে ভিন্নতা বেশি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ধর্মীয় কারণে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের আমিষ খেতে পারেন না। এই ধরনের বাধাগুলোকে অতিক্রম করে ওই বাজারগুলো ধরতে হবে আমাদের। সীমান্তের ওপারে গ্রাহকদের হাতে পণ্য পৌঁছে দেয়ার এখনও অনেক সুযোগ রয়েছে।’
ইয়োশিনোয়ার প্রত্যাশা, ২০২৯ সালের মধ্যে রামেনের ব্যবসা থেকে যোগ হবে চার হাজার ইয়েনের রাজস্ব, যা মোট বিক্রির ১৩ শতাংশ। ২০২৪ সালে যা ছিল মাত্র চার শতাংশ। লক্ষ্য অর্জনে এরইমধ্যে জাপানের বড় বড় রামেন ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।